বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভরা বাজারে বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে শ্যাম মুখোপাধ্যায়কে পরাজিত করেছিলেন বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী তুষারকান্তি ভট্টাটার্য। নির্বাচনের ফল বেরোনোর দু’মাসের মধ্যেই তুষারবাবু এ বার শ্যামেরই দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন।
সোমবার দুপুরে শহরের একটি গেস্ট হাউসে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন বিষ্ণুপুরের কংগ্রেস বিধায়ক তুষারবাবু। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট করা মানুষ মেনে নেয়নি। আমি জিতেছি জনগণের ভোটে। দিদি মানুষের সঙ্গে থেকে তাদের ভাল করছেন। আমি তাঁর উন্নয়নের কাজে সামিল হতে চাই।’’ তুষারবাবু বলেন, ‘‘২১ জুলাই কলকাতায় থাকবো। দিদি ডাকলে আমি ওই দিনই তৃণমুলে যোগ দিতে রাজি।’’
তবে এ দিনও শ্যামবাবুকে ছেড়ে কথা বলেননি তুষারবাবু। তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলে যোগ দিলে ওই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে শ্যামবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবেন। তাঁর দাবি, ২৬ বছর পুরপ্রধান এবং এক বারের জন্য রাজ্যের মন্ত্রী হয়েও শ্যামবাবু এলাকার কোনও উন্নয়ন করতে পারেননি। এলাকার রাস্তাঘাট, বাঁধ, বাসস্ট্যান্ড, ড্রেন সমস্ত কিছুই জীর্ণ হয়েছে। সংরক্ষিত মন্দিরের পাশে গজিয়ে উঠেছে বাড়ি। বহু পুকুর ভরাট হয়েছে। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় এসে কাজ করার চেষ্টা করলে তাতেও শ্যামবাবু বাধা দিয়েছেন বলে বিধায়কের অভিযোগ। তুষারবাবুর দাবি, কুমারী টকি হাউসের সামনে থেকে কালীমেলা পর্যন্ত পাকা রাস্তা তৈরির জন্য তিনি উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিন্তু শ্যামবাবু সেই কাজে বাধা দেন। পাশাপাশি তাঁর বিভিন্ন উদ্যোগ শ্যামবাবু নিজের নামে চালাচ্ছেন বলে তুষারবাবু অভিযোগ করেন। যদিও শ্যামবাবুর দাবি, কাজে বাধা দেওয়া তো দূরের কথা ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য তিনিই তদ্বির করেছেন। বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে কংগ্রেস। দলের টিকিটে জেতার কয়েক মাসের মধ্যেই তুষারবাবু দলবদল করতে চাওয়ায় বাঁকুড়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলমাধব গুপ্ত বলেন, ‘‘এটা শুধু দলের প্রতি নয়, মানুষের প্রতিও বিশ্বাসঘাতকতা। দল যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নেবে। যাদের রায়ে উনি বিধায়ক হয়েছেন তাঁরা এই প্রতারণা মেনে নেবেন না।’’ নির্বাচনে জোটসঙ্গী সিপিএম মুখ খুলতে চায়নি। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র বলেন, ‘‘ওঁর দল যা বলার বলুক।’’