পুরপ্রধানের কুর্সিতে কে বসবেন, আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম ঘোষণা না করা হলেও তা নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। তৃণমূল এ বার পুরুলিয়ার বিধায়ক কে পি সিংহ দেওকে পুরপ্রধান হিসেবে মুখ করে নির্বাচনে নেমেছিল। কিন্তু উপপুরপ্রধান ও চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের সদস্য কারা হবেন তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা তুঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের আগে এই নিয়ে শহর তৃণমূল নেতৃত্ব ও কর্মীদের মধ্যে ডামাডোল পড়ে গিয়েছে।
গত বুধবার তৃণমূল নেত্রী কলকাতার নজরুল মঞ্চে দলের নির্বাচিত প্রতিনিধি ও নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু পুরুলিয়ার উপপুরপ্রধান কে হবেন বা চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের সদস্যই বা কারা হবেন তা নিয়ে কোনওরকম ইঙ্গিত তাঁরা সেই বৈঠক থেকে পাননি। এক বর্ষীয়ান কাউন্সিলর বলেন, ‘‘নেত্রী শুধু বলেছেন, পুরুলিয়ায় কেপিদা জিতেছেন তো? কে পুরপ্রধান হবেন তা শান্তিদা আর কেপিদা মিলে দেখবেন। পুরুলিয়া নিয়ে নেত্রী আর কোনও কথা বলেননি।’’ আগের বোর্ডে উপপুরপ্রধান ছিলেন সামিমদাদ খান। এ বারও তিনি জিতেছেন। পাশাপাশি গত বোর্ডের আরও চার কাউন্সিলর বৈদ্যানাথ মণ্ডল, পাপিয়া দাস, ময়ূরী নন্দী ও মৌসুমী দত্ত-ও জিতেছেন। নতুন মুখও রয়েছে। ফলে উপপুরপ্রধান কে হবেন তা নিয়ে যেমন জল্পনা চলছে, তার থেকেও বেশি আলোচনা হচ্ছে চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের সদস্য কারা হবেন।
দলের নব নির্বাচিত কাউন্সিলরদের একটা বড় অংশ চাইছেন, নতুন মুখদেরই চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের দায়িত্ব অর্পণ করা হোক। তাঁদের যুক্তি, বিগত বোর্ডে চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের সদস্যদের একাংশের কাজকর্মের বিরুদ্ধে দলের অন্দরেই অনেকে সরব হয়েছিলেন। বিষয়টি দলের জেলা পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ পর্যন্ত গড়ায়। এক নব নির্বাচিত কাউন্সিলর বলেন, ‘‘চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে তো প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদারি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাই আমাদের বক্তব্য পুরপ্রধান যেমন নতুন মুখ হিসেবে কেপিদাকে রাখা হয়েছে, সেই ভাবেই নতুন মুখদেরই চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের দায়িত্ব দেওয়া হোক।’’
অন্যদিকে বিগত বোর্ডে চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল হিসেবে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে দল এ বার প্রদীপ মুখোপাধ্যায় ও পুরপ্রধান তারকেশ চট্টোপাধ্যায়কে টিকিট দেয়নি। কাউন্সিলের বাকি তিন সদস্য অবশ্য টিকিট পেয়েছেন এবং জিতেওছেন। তাঁদের বক্তব্য, মানুষ তো মূল্যায়ণ করেছেন তাঁদের কাজের বিচারেই। কাজেই এ বারও তাঁদের পুরনো পদে রাখা উচিত। বিগত বোর্ডের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলের সদস্যদের অন্যতম বৈদ্যনাথ মণ্ডলের মন্তব্য, ‘‘এ নিয়ে আমি কিছু বলব না। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে মানব। আমরা পুরুলিয়ার উন্নয়নের কথা মাথায় রেখেই কাজ করব।’’
আর কে পি সিংহ দেও বলছেন, ‘‘ সব মতামতই সমান গুরুত্বপূর্ণ। সব বিষয় মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘দলে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’