উদ্যোগ ছাত্র-যুব মেলায়

বাষ্প থেকে এল বিদ্যুৎ,চমক ছাত্রের

জেলার স্কুল-কলেজ মিলিয়ে মোট ৫৫টি বিজ্ঞান মডেল প্রদর্শিত হয়। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও কলেজ স্তরের প্রদর্শিত বিজ্ঞান মডেলের মধ্যে সেরা তিনটি করে মডেলকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুল-কলেজের পাঠ্যবইয়ে আটকে থাকেনি বিজ্ঞান নিয়ে কৌতূহল। তা থেকে চমক লাগানো বিজ্ঞানের বিভিন্ন মডেল বানিয়েছিল জেলার স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজে শুক্রবার শুরু হয়েছিল ছাত্র-যুব বিজ্ঞান মেলা। যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া দফতরের পরিচালনায় এবং কলেজের ব্যবস্থাপনায় দু’দিনের মেলা শেষে শনিবার পুরস্কার ঘোষিত হল। জেলার স্কুল-কলেজ মিলিয়ে মোট ৫৫টি বিজ্ঞান মডেল প্রদর্শিত হয়। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও কলেজ স্তরের প্রদর্শিত বিজ্ঞান মডেলের মধ্যে সেরা তিনটি করে মডেলকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ভূ-তাপ শক্তি থেকে কী ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব সেটাই মডেল আকারে প্রস্তুত করেছিল চিনপাই উচ্চবিদ্যালয়ের দুই পড়ুয়া শেখ ওয়াসিম ও সাবির ইমাম। মাধ্যমিক বিভাগের ওই দুই পড়ুয়ার দাবি, ভূগর্ভে সঞ্চিত লাভার উত্তাপ বা স্টিমকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। বিজ্ঞান মেলায় এটা দেখানো সম্ভব নয়। তাই প্রেসার কুকারের স্টিম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে দেখিয়ে প্রথম স্থান দখল করে দুই খুদে বিজ্ঞানী।

আলোকরশ্মি দিয়ে কী ভাবে কোনও বস্তুর উচ্চতা মাপা সম্ভব, পাঁচশোয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই পড়ুয়া নুরমহম্মদ হক এবং জিয়ারুল ইসলাম সেই মডেল হাজির করেছিল। উচ্চমাধ্যমিক বিভাগের প্রতিযোগিতায় তাদের মডেল প্রথম স্থান দখল করেছে।
কলেজ স্তরের প্রতিযোগিতায় হেতমপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সুদীপ্তা মিশ্র এবং ভবতোষ গড়াইয়ের বানানো মডেল প্রথম স্থান অধিকার করেছে। অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করে সূর্যালোক কে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে সোলার কুকার বানানোর পদ্ধতি দেখিয়েছেন ওই দুই পড়ুয়া।

Advertisement

উচ্চ মাধ্যমিকস্তরে সাঁইথিয়ার বড়শিজা উচ্চবিদ্যালয়ের দুই ছাত্র শেখ ফয়জল হোসেন এবং আমিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ শক্তিকে চুম্বক শক্তিতে রূপান্তরিত করে কী ভাবে শক্তিশালী ধারালো অস্ত্র তৈরি করা যায় সেটা দেখিয়েছে। তারা পেয়েছে দ্বিতীয় পুরস্কার। ওই বিভাগেই দুবরাজপুরের কেডিএস হাই মাদ্রাসার দুই পড়ুয়া শিল্পা সাহা ও মহম্মদ মইজউদ্দিন দেখিয়েছে বৃষ্টির জল ও দৈনন্দিন ফেলে দেওয়া জলকে কাজে লাগিয়ে ভূ-গর্ভস্থ জলের স্তরকে রিচার্জ করা সম্ভব। তৃতীয় হয়েছে তারা।

কলেজ স্তরের প্রতিযোগিতায় লাভপুর শম্ভুনাথ কলেজের ছাত্র সুমন মণ্ডল ও রিয়া সাহা দেখিয়েছে, ফুলগাছের গোড়ায় স্যাঁতসেতে মাটিতে দস্তা এবং তামার পাত পুঁতে তা থেকে বিদ্যুৎ তৈরির কৌশল। তাঁদের মডেল জিতেছে দ্বিতীয় পুরস্কার। বজ্রপাত থেকে সঞ্চিত বিদ্যুৎ মানুষের কাজে লাগানোর ম়ডেল বানিয়ে তৃতীয় হয়েছেন বোলপুর কলেজের দুই পড়ুয়া আকাশ দত্ত ও সৌরভ দাস।

অন্য দিকে, কম খরচে ঘরের তাপমাত্রা কমানোর কৌশল দেখিয়ে মাধ্যমিক স্তরের প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছে মনোহরপুর নাচনশা স্কুলের দুই পড়ুয়া মহম্মদ মাহমুদল হাসান এবং প্রিয়া দাস বৈরাগ্য। তৃতীয় হয় কুরুন্নাহার উচ্চবিদ্যালয়ের সুদীপ মণ্ডল ও যীশু মণ্ডল। তারা বানিয়েছে কম খরচে ওয়াটার ফিল্টার। তাদের দাবি, দূষিত জল এমনকী নর্দমার জলকেও পরিস্রুত করতে পারে ওই ফিল্টার।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন অধ্যাপক বিদ্যুৎকুমার সাহা, নবকুমার মণ্ডল ও শ্যামলকুমার হুই বিচারের দায়িত্বে ছিলেন। ওঁরা সব ক’টি মডেল দেখেন। কথা বলেন পড়ুয়াদের সঙ্গে। পড়ুয়াদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও বিজ্ঞান চেতনায় খুশি তাঁরা। জেলা যুবকল্যাণ আধিকারিক সৈকত হাজরা, আয়োজক কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায়দের আশা, এখানে সেরারা রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায়ও ভাল ফল করবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement