— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে বিনা চিকিৎসায় পড়ে থেকে মৃত্যু হল ভবঘুরের। হাসপাতালের চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের যাতায়াতের পথে এ ভাবে বিনা চিকিৎসায় ভবঘুরের মৃত্যুতে উঠে এসেছে হাসপাতালের অমানবিক ছবি। ঘটনা বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশ কিছু দিন আগেই এক ভবঘুরে কোনও ভাবে চলে আসেন বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বরে। গত কয়েক মাস ধরে স্থানীয় এলাকায় খাবার সংগ্রহ করতেন ওই ভবঘুরে। স্থানীয়দের কাছে তাঁর পরিচিতি ঠাকুর নামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ও ঠাকুরকে এলাকায় ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন স্থানীয়রা। সন্ধ্যার পর ওই ভবঘুরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের গেটের সামনে পড়েছিলেন। শুক্রবার ভোর পর্যন্ত ঠাকুরকে হাসপাতালের গেটের সামনেই পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের দাবি, হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে কার্যত বিনা চিকিৎসায় পড়ে থেকে থেকেই শুক্রবার ওই ভবঘুরের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিয়ে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল মুখে কুলুপ আটলেও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গোপাল দাস বলেন, ‘‘এ ভাবে কেউ বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে তা কখনই কাম্য নয়। কিন্তু ওই ভবঘুরে প্রায়শই হাসপাতাল চত্বরের একটি চাতালে শুয়ে থাকতেন বলে শুনেছি। তাই হয়ত চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরা বুঝতে পারেননি তিনি গুরুতর অসুস্থ। বিষয়টি যখন নজরে এসেছে তত ক্ষণে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।’’
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সারা দিনে বার বার ঠাকুরকে পাশ কাটিয়ে গেলেও কেউ বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাননি। ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার ভয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের পরিজনেরাও বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা। কিন্তু কেউ পাত্তা দিচ্ছেন না দেখেও স্থানীয়রা কেন এগিয়ে এসে ঠাকুরকে হাসপাতালে ভর্তি করালেন না, সেই প্রশ্নও উঠছে। আর নানা প্রশ্নের জটে পড়ে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও জুটল না ভবঘুরের। হাসপাতালের দোরগোড়াতেই মৃত্যু হল তাঁর।