প্রধান কে? ধুলাইয়ে ‘গণ্ডগোল’

সোনামুখী ব্লক জুড়েই দ্বিতীয় কোনও মনোনয়ন না হওয়ায় এক তরফা ভাবে সমস্ত পঞ্চায়েতের সমস্ত আসনের দখল পেয়েছে তৃণমূল। কিন্তু, তারপরেও দ্বন্দ্ব এড়ানো গেল না। প্রধান নির্বাচনকে ঘিরে মঙ্গলবার গণ্ডগোলের অভিযোগ উঠল সোনামুখী ব্লকের ধুলাই পঞ্চায়েতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সোনামুখী শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:২৬
Share:

সজাগ: সোনামুখীর মানিকবাজার পঞ্চায়েতে। মঙ্গলবার। ছবি: শুভ্র মিত্র

বিরোধীরা শাসকদলের বিরুদ্ধে মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। এমনকী শাসকদলেরই একাংশ সেই একই অভিযোগে সরব হয়েছিলেন তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। সোনামুখী ব্লক জুড়েই দ্বিতীয় কোনও মনোনয়ন না হওয়ায় এক তরফা ভাবে সমস্ত পঞ্চায়েতের সমস্ত আসনের দখল পেয়েছে তৃণমূল। কিন্তু, তারপরেও দ্বন্দ্ব এড়ানো গেল না। প্রধান নির্বাচনকে ঘিরে মঙ্গলবার গণ্ডগোলের অভিযোগ উঠল সোনামুখী ব্লকের ধুলাই পঞ্চায়েতে।

Advertisement

এ দিন বিষ্ণুপুর মহকুমার সোনামুখী, ইন্দাস, পাত্রসায়র, কোতুলপুর ও জয়পুর ব্লকে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ছিল। অন্যত্র নির্বিঘ্নেই বোর্ড গঠন হয়েছে বলে খবর। কিন্তু, ধুলাই পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচিত হলেও উপপ্রধান নির্বাচন হয়নি। কারণ, তৃণমূল সূত্রে খবর যাঁকে উপপ্রধান করার নির্দেশ ছিল, তিনি বৈঠকে হাজিরই হননি।

ধুলাই পঞ্চায়েতের মোট আসন ১৫টি। সব ক’টিই তৃণমূলের। তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য সোনামুখী ব্লকের বাসিন্দা কাশীনাথ মণ্ডলের দাবি, ‘‘আট সদস্যকে নিয়ে আমরা বেলা ১১টায় ধুলাই পঞ্চায়েত অফিসের সামনে পৌঁছলে ১৪৪ ধারা থাকা সত্ত্বেও তৃণমূলেরই বেশ কিছু লোকজন আমাদের উপর চড়াও হন।’’ পলসরা ২ সংসদের তৃণমূল সদস্য নিষ্কর কাপড়ির অভিযোগ, ‘‘জয়ী হওয়ার শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও আমাদের দলেরই কর্মীরা পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকতে বাধা দিয়ে মারধর করে। মোটরবাইক ভেঙে দেয়। টাকাও ছিনতাই করে। এমনকী বিদ্যাধরপুর সংসদের সদস্য সিদ্ধার্থ রায়কে তুলে নিয়েও যায়। ঘণ্টা তিনেক পরে তাঁকে আহত অবস্থায় ধুলাই পঞ্চায়েতের পাশে পাওয়া যায়।’’ যদিও তাঁরা থানায় কোনও অভিযোগ করেননি।

Advertisement

নিষ্করের দাবি, তাঁরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলেন। তিনিই প্রধান পদের দাবিদার ছিলেন। তাই তাঁদের আটকাতেই পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালানো হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সোনামুখীর পুরপ্রধান সুরজিৎ মুখোপাধ্যায়ের আমরা পুরনো অনুগামী। তাঁর নতুন অনুগামীরা আমাদের রুখে দিতেই হামলা চালিয়েছে। সময় মতোই থানায় অভিযোগ করা হবে।’’

ধুলাই পঞ্চায়েতের নতুন প্রধান হয়েছেন আমশোল সংসদের হাফিজুল মিদ্যা। তাঁর দাবি, ‘‘আমি পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরে ছিলাম। বাইরে কোনও গণ্ডগোল হয়েছে বলে শুনিনি। আমাদের ১৫ জন সংসদের মধ্যে ৮ জন সংসদ উপস্থিত ছিলেন। সবাই আমাকে প্রধান হিসেবে ভোট দেন।’’ বিডিও (সোনামুখী) রেজওয়ান আহমেদও দাবি করেন, ‘‘কোনও ঝামেলা হয়নি। কেউ অভিযোগও করেননি। নির্বিঘ্নেই প্রধান নির্বাচন হয়েছে। কেউ উপপ্রধানের নাম প্রস্তাব করেননি বলে উপপ্রধান নির্বাচন হয়নি।’’ সোনামুখী থানারও দাবি, মহেশপুর গ্রামের কাছে সামান্য গণ্ডগোল হয়েছিল। পুলিশ সামলে দিয়েছে। কিন্তু, ধুলাই পঞ্চায়েতের কাছে গোলমালের খবর নেই।

সোনামুখী পুরপ্রধান দাবি করেছেন, ‘‘ধুলাই পঞ্চায়েতের দু’পক্ষই দলের পুরনো দিনের লোক। নিষ্কর কাপড়ি এবং হাফিজুল মিদ্য— দু’জনেই ধুলাই পঞ্চায়েতের প্রধানের দাবিদার ছিলেন। দলই সব দিক বিচার করে হাফিজুলকে প্রধান করে। নিষ্করকে উপপ্রধান করতে চেয়েছিল। কিন্তু, অভিমান করে নিষ্কর পঞ্চায়েতে আসেননি। কাশীনাথও দলের পুরনো কর্মী। তাঁরও অভিমান হয়েছে। সবাইকে নিয়ে দ্রুত আলোচনায় বসে সব সমস্যার সমাধান করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement