নির্বাচন নির্বিঘ্নে হলেও রাজনৈতিক গোলমাল থেমে নেই পুরুলিয়া জেলায়। প্রবাচ-পর্বে এতদিন রাজনৈতিক গণ্ডগোল চলছিল পুরুলিয়ায়। এ বার ভোট গণনা শুরুর আগে দুই প্রার্থীর মধ্যে মারপিটের অভিযোগ উঠল ঝালদায়।
ঝালদার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী অনিল স্বর্ণকার বিদায়ী পুরপ্রধান সুরেশ অগ্রবালের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে তাঁকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে নির্দল প্রার্থী সুরেশবাবুও অনিলবাবুর বিরুদ্ধে পাল্টা মরধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার বিকেলে। ঝালদার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী অনিল স্বর্ণকারের দাবি, ‘‘কুইরী পাড়া এলাকায় দলের কর্মীদের সঙ্গে ভোট নিয়ে আমি আলোচনা করছিলাম। সেই সময় এই ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী সুরেশ অগ্রবাল মোটরবাইক নিয়ে এসে আমার জামার কলার ধরে নিগ্রহ করেন। আমকেও হুমকিও দেন।’’ তিনি জানান, বুথের কাছে সুরেশবাবু অস্থায়ী ক্যাম্প করায় তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তা ছাড়া প্রচারেও তিনি সুরেশবাবুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন। এ ছাড়া, কয়েকজন ভুয়ো ভোটারকে দিয়ে সুরেশবাবুর ভোট দেওয়ানোর চেষ্টা করেন বলে অনিলবাবুর দাবি। সে সব নিয়ে প্রতিবাদ করায় তাঁর উপরে হামলা বলে তিনি অভিযোগ তুলেছেন।
অন্যদিকে, সুরেশবাবু দাবি করেছেন, ‘‘অনিলবাবু বেশ কয়েকদিন ধরে আমাকে ‘ব্ল্যাকমেল’ করছিলেন। তিনি বলছিলেন যে আমার বিরুদ্ধে তথ্য জানার অধিকার আইনে কিছু প্রকল্প নিয়ে জানতে চেয়ে চিঠি দেবেন। তাই তাঁর কথা আমাকে মেনে চলার জন্য হুমকি দিচ্ছিলেন। এমনকী আমার ভোট যাতে তাঁর পক্ষে যায়, সে জন্যও তিনি চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তাঁর কথা আমি গুরুত্ব দিইনি। ভোটের দিনেও তিনি ওই হুমকি দিতে এলে আমি পাত্তা দিইনি। কিন্তু রবিবার ফের তিনি আমাকে গাড়ি থামিয়ে হুমকি দেন। তখন প্রতিবাদ জানালে আমাকে মারধর করা হয়।’’ তিনি অনিলবাবুর তোলা যাবতীয় অভিযোগ মানতে চাননি। পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে, এক মহিলা ভোটারকে নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে নির্দল প্রার্থী সোমনাথ কর্মকারের এক অনুগামীর বিরুদ্ধে। ঝালদার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। এই ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ কর্মকারেরে অভিযোগ, ‘‘আমাদের এক মহিলা সমর্থক রবিবার রাতে পুরনো বাঁধ বস্তি এলাকায় দাঁড়িয়েছিলেন। তখন ওই ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী সোমনাথবাবুর এক অনুগামী আমাদের সমর্থক ওই মহিলাকে হুমকি দেয় এবং নিগ্রহ করে। ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে ওই ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী সোমনাথ কর্মকার দাবি করেন, ‘‘পাড়ার ঝামেলাকে রাজনীতির রং দেওয়ার চেষ্টা করছেন প্রদীপবাবু। ওই এলাকার একটি ট্রান্সফর্মার বন্ধ করা নিয়ে এলাকায় গণ্ডগোল হয়। সেই ঘটনাটিকে প্রদীপবাবু রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে চালানোর চেষ্টা করছেন।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।