পাল্টে গেল বয়ান। একমাস আগে যিনি আদালতে দাঁড়িয়ে বিচারকের কাছে প্রেমিকাকে খুনের কথা কবুল করেছিলেন, সেই উদয়ন দাসই এ বার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করলেন।
বুধবার বাঁকুড়া আদালতে তোলা হলে উদয়ন বিচারকের কাছে দাবি করেন, ভোপালের এক পুলিশ কর্তা তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন, বাঁকুড়া পুলিশের কাছে প্রেমিকা আকাঙক্ষা শর্মাকে খুনের কথা স্বীকার না করলে তাঁকে মাদক দ্রব্য বিক্রির মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেবেন। সে কারণেই তিনি পুলিশ হেফাজতের শেষে আদালতে বলেছিলেন, আকাঙক্ষাকে খুন করেছেন। তবে এখন তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করছেন। চেষ্টা করেও অবশ্য ভোপাল পুলিশের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বাবা-মা ও প্রেমিকাকে খুনের অভিযোগে ধৃত উদয়নের হয়ে আগেই বাঁকুড়া আদালতে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়। উদয়ন আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কাছে আগেই সাহায্য চেয়েছিলেন। তাই এ বার তাঁর হয়ে সওয়াল করতে নামেন জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের আইনজীবী বিল্বেশ্বর সিংহ। এ দিন জেল-হাজত শেষে উদয়নকে বাঁকুড়া আদালতে তোলা হয়। সেখানে বিল্বেশ্বরবাবু উদয়নের জামিনের আর্জি জানান। যদিও বিচারক তা খারিজ করে দিয়েছেন। ২৯ মার্চের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা খুনের মামলার কেস ডায়েরি ও নিহত তরুণীর দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারক। নিহত তরুণীর পরিবারের পক্ষের আইনজীবী সায়ন্তন চৌধুরী দাবি করেন, ‘‘উদয়ন এতদিন নাটক করছিলেন। এ বার তার প্রকৃত চেহারা সামনে আসছে।’’
গত ২ ফেব্রুয়ারি ভোপালের সাকেতনগরে উদয়নের বাড়ির বেদি খুঁড়ে বাঁকুড়ার পুলিশ প্রেমিকা আকাঙক্ষা শর্মার সিমেন্টের ‘মমি’ করা দেহ উদ্ধার করে। জেরায় সে পুলিশের কাছে কবুল করেছিল, তার বাবা-মাকেও ছত্তীসগঢ়ের রাইপুরে খুন করে পুঁতে রেখেছে। পরে সেই জোড়া দেহের কঙ্কালও উদ্ধার হয়। বাঁকুড়া পুলিশ আকাঙ্ক্ষা খুনের মামলায় উদয়নকে বাঁকুড়ায় নিয়ে এসেছিল। রাইপুরের পুলিশও তাঁকে সেখানে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে বাঁকুড়ার জেলে পাঠানো হয়। এরমধ্যে রাইপুরের পুলিশ তাঁকে জেল থেকে ফের নিয়ে যায়। সেখান থেকে এ দিন বাঁকুড়ায় এনে সরাসরি আদালতে তোলা হয় উদয়নকে। পুলিশ জানিয়েছে, আদালতে নথি দেওয়ার কাজ চলছে।