বিল বাড়ল ১০ গুণ, বিপাকে আদিবাসীরা

এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ি ২ ব্লকের কেন্দুয়া পঞ্চায়েতের এই গ্রামে গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন যোজনায় বেশ কয়েক বছর আগে বিদ্যুৎ আসে। বাসিন্দাদের দাবি, ২০১৬ সালে এই সময় পর্যন্ত পরিবার পিছু বিদ্যুতের বিল আসত গড়ে ত্রৈমাসিক ২০০-৩৫০ টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০২:৩৫
Share:

বিপিএল তালিকাভুক্ত পরিবারগুলিতে এক বছর আগেও মাসিক বিদ্যুৎ বিল ছিল গড়ে ছিল ৮০-১২০ টাকা। অর্থাৎ, বছরে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা। সেই বিলই এখন বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ন’হাজার থেকে ৪১ হাজার টাকায়!

Advertisement

এই বিল পেয়ে বেকায়দায় সিউড়ি ২ ব্লকের গোবড়া আদিবাসী পাড়ার প্রায় ৭০ ঘর বাসিন্দা। দিন আনি দিন খাই পরিবারগুলি কী ভাবে এত টাকার বিল মেটাবে, শুক্রবার এই প্রশ্ন তুলে বিদ্যুৎ দফতরের সিউড়ি কালীবাড়ি সাবস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজারের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা। বিষয়টি তাঁরা খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিলেও একই সঙ্গে জানিয়েছেন, খরচ করে থাকলে ওই বিল মেটাতেই হবে। প্রযোজনে কিস্তিতেও টাকা মেটাতে হবে। শেষমেশ মিটার রিডিং দেখে সঠিক বিল নেওয়ার আবেদন পত্র দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা। কিন্তু দুঃশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে ওই পরিবারগুলির।

এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ি ২ ব্লকের কেন্দুয়া পঞ্চায়েতের এই গ্রামে গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন যোজনায় বেশ কয়েক বছর আগে বিদ্যুৎ আসে। বাসিন্দাদের দাবি, ২০১৬ সালে এই সময় পর্যন্ত পরিবার পিছু বিদ্যুতের বিল আসত গড়ে ত্রৈমাসিক ২০০-৩৫০ টাকা। গত এক বছর কোনও বিল আসেনি। তা নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরে বলার পরে, দিন চারেক আগে হঠাৎ পরিবার পিছু রাশি রাশি টাকার বিল আসতেই তাঁরা তাজ্জব বনে গিয়েছেন।

Advertisement

গোবড়া আদিবাসী পাড়ার গ্রাহক মাতাল মুর্মু বলেন, ‘‘আগে মাসে ১০০ টাকা করে বিদ্যুতের বিল দিয়েছি। এ বার বছরে বিদ্যুতের বিল এসেছে ১২ হাজার ৯৫ টাকা!’’ ধরম টুডুর দাবি, ‘‘গত বর্ষায় বাড়ি ভেঙে পড়ার পর থেকে বিদ্যুতের সংযোগই নেই। অথচ বিল এসেছে ১৩ হাজার ৫৫৬ টাকা। কী করে বিদ্যুৎ খরচ হল?’’ বাসিন্দাদের দাবি, সামান্য আয়ে কী করে এই টাকা মেটাবেন?

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ২০০৯ সাল থেকে রুর‌্যাল ইলেক্ট্রিফিকেশন প্রকল্পে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছু গ্রামে সমন্বয়ের অভাবে মিটারের সঙ্গে মাস্টার কার্ড দেওয়া হয়নি। তাই বিদ্যুৎ খরচ করলেও সঠিক বিল দিতে হয়নি। ওই গ্রামটিও সেই তালিকায় পড়ে। কাজেই দীর্ঘ দিনের খরচ করা বিদ্যুতের বিল একেবারে এসেছে।

কিন্তু তার জন্য দায় কার? বিদ্যুৎ বণ্টন বিভাগের রিজিওনাল ম্যানেজার দয়াময় শ্যাম বলেন, ‘‘আমার জানা নেই, খোঁজ নিচ্ছি।’’ দফতরের সিউড়ি সাবস্টেশনের ম্যানেজার রামিজুল হক বলেন, ‘‘পরিবারগুলির অর্থনৈতিক অবস্থা জানি। আমি সরেজমিন তদন্ত করে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement