Projector Price

ভারত ফাইনালে উঠতেই জায়ান্ট স্ক্রিনের ভাড়ায় লাফ

বৈদ্যুতিন সামগ্রী ভাড়া দেওয়ার ব্যবসায় যুক্তদের দাবি, ভারত বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌছতেই প্রজেক্টর, এলইডি টেলিভিশন আর জায়ান্ট স্ক্রিন ভাড়া নেওয়ার হিড়িক পড়েছিল বুধবার রাতে।

Advertisement

তন্ময় দত্ত 

  নলহাটি শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:০৩
Share:

প্রজেক্টর পরীক্ষা করা হচ্ছে দোকানে। নিজস্ব চিত্র।

বিরাট কোহলি, মহম্মদ শামি, শ্রেয়স আয়ার— এই ত্রয়ীর তাণ্ডবে যখন ভারতের ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন ক্রমশ উজ্জ্বল হচ্ছিল বুধবার রাতে, তখনই মুম্বইয়ের আরব সাগরের পাড়ে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম থেকে ১৯৬৪ কিলোমিটার দূরে (গুগলের তথ্য অনুয়ায়ী) বীরভূমে বাড়তে শুরু করেছিল প্রজেক্টর, জায়ান্ট স্ক্রিন আর এলইডি টেলিভিশনের ভাড়া। বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে কোনও ব্যবসায়ীর কাছেই মেলেনি ওই সব সামগ্রী। ফলে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে অনেককে।

Advertisement

জেলার ডেকরেটর এবং বৈদ্যুতিন সামগ্রী ভাড়া দেওয়ার ব্যবসায় যুক্তদের দাবি, ভারত বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌছতেই প্রজেক্টর, এলইডি টেলিভিশন আর জায়ান্ট স্ক্রিন ভাড়া নেওয়ার হিড়িক পড়েছিল বুধবার রাতে। সময় যত গড়িয়েছে ভাড়াও তত বেড়েছে। রবিবার ফাইনাল খেলা দেখার জন্য অনেক ক্লাব ও সংগঠন ওই সব জিনিস ভাড়া করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে জায়ান্ট স্ক্রিন পেতে কালঘাম ছুটেছে অনেকের। ব্যবসায়ীরা জানান, বুধবার রাত থেকেই তাঁদের কাছে এলইডি বা প্রজেক্টর ভাড়া চেয়ে ফোন আসা শুরু হয়। সকলেরই আবদার, ভাড়া যা-ই হোক না কেন, একটি প্রজেক্টর তাঁদের দিতেই হবে। সিউড়ি, বোলপুর ও রামপুরহাট শহরের বহু কালীপুজো কমিটি পুজোর জন্য জায়ান্ট স্ক্রিন, প্রজেক্টর বা এলইডি টেলিভিশন ভাড়া করেছিল। সেগুলি বিশ্বকাপ ফাইনাল পর্যন্ত রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

এ দিন নলহাটির এক কম্পিউটারের দোকানে স্থানীয় এক ক্লাবের সদস্যেরা প্রজেক্টর ভাড়া নিতে এসেছিলেন। কিন্তু হতাশ হতে ফিরতে হয় তাঁদের। দোকানের মালিক জানিয়ে দেন, তাঁর সবক’টি প্রজেক্টর-ই ‘বুক’ করা হয়ে গিয়েছে। তিনি পাশের জেলা মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ীদের থেকে ওই সব সামগ্রী আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

Advertisement

ফোটোগ্রাফি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মুরারইয়ের সুমিত ভকত বলেন, “বুধবার রাত ১২টার মধ্যেই তাঁর দু’টি জায়ান্ট স্ক্রিন, চার সেট প্রজেক্টর ও তিনটি ৫৬ ইঞ্চি এলইডি টিভি ভাড়া করে নেয় কয়েকটি সংগঠন। এখন মুর্শিদাবাদ ও মালদহ থেকে ওই সব জিনিস আনার ব্যবস্থা করেছি।’’ তিনি জানান, বছরের অন্য সময়ে একটি জায়ান্ট স্ক্রিনের ছ’ঘণ্টার ভাড়া ঘোরাফেরা করে দশ হাজার টাকার আশপাশে। বুধবার রাত থেকেই ভাড়া চড়তে শুরু করেছে। এক ডেকরেটরের দাবি, ‘‘একটি জায়ান্ট স্ক্রিনের জন্য কেউ কেউ ১৪-১৫ হাজার টাকাও ভাড়া হাঁকছেন। ফাইনাল ম্যাচে উত্তেজনার বসে কেউ কিছু করে ফেললে ক্ষতি হবে প্রজেক্টর বা জায়েন্ট স্ক্রিনের। এই আশঙ্কায় অনেকে আবার ভাড়া দিতে রাজি হচ্ছেন না।’’

আর এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘খেলা চলবে ছ’ঘণ্টার বেশি। তাই ভাড়া বাড়িয়েছি। সাধারণত প্রজেক্টরের ভাড়া ঘোরাফেরা করে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। আজ তা বেড়ে হয়েছিল চার-পাঁচ হাজার টাকা। এলইডি টিভির ভাড়া দু’হাজার থেকে বেড়ে হয় তিন হাজার টাকা।”

নলহাটির ধরমপুর গ্রামের কয়েক জন প্রজেক্টর ভাড়া করতে নলহাটি এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে অমর দাস, প্রবীর সেন বলেন, “প্রজেক্টর না পেয়ে এলইডি টিভি ভাড়া করলাম। গ্রামের সকলে এক সঙ্গে বসে খেলা দেখব। বুধবার ভারত যা খেলেছে, তাতে বিশ্বকাপ হাতের মুঠোয় বলে মনে হচ্ছে। কাপ জয়ের মুহূর্ত সকলে মিলে উপভোগ করব।” ক্রিকেট জ্বরে আক্রান্ত সিউড়ি শহর। শহরের রেড রোজ ক্লাবের সদস্যেরা জানান, ক্লাব প্রাঙ্গণে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে খেলা দেখানো হবে৷ শহরের একাধিক রেস্তরাঁয় জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানোর পরিকল্পনা করেছেন মালিকেরা।

মুরারইয়ের একটি ক্লাবের সদস্য কাঞ্চন শেখ, ঝুনু শেখ বলেন, “বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের অনেক জায়গায় খোঁজ করেও জায়ান্ট স্ক্রিন বা প্রজেক্টর পাইনি। ক্লাবের সদস্যেরা জানিয়েছেন, বেশি টাকা চাঁদা দিতে তাঁরা প্রস্তুত। বড় পর্দার ব্যবস্থা করতেই হবে। দেখি কোথায় পাওয়া যায়।”

নলহাটির ব্যবসায়ী সৌমেন ঘোষ বলেন, “দোকানে যে ক’টি এলইডি বা প্রজেক্টর ছিল, সবই ভাড়া হয়ে গিয়েছে। দুপুরের পরে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement