TMC

সামাজিক দূরত্ব ‘উড়িয়ে’ মিছিল

কিছু জায়গায় ভিড়ের ঠেলায় করোনা রোখার স্বাস্থ্যবিধি উড়ে গেল। এমনই অভিযোগ উঠেছে কোতুলপুরে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:৩৩
Share:

ঘেঁষাঘেঁষি: বাঁকুড়ার কোতুলপুরে তৃণমূলের মিছিল। নিজস্ব চিত্র

কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জনবিরোধী নীতি’র প্রতিবাদে রবিবার বাঁকুড়ার বিভিন্ন এলাকায় পথে নামলেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু কিছু জায়গায় ভিড়ের ঠেলায় করোনা রোখার স্বাস্থ্যবিধি উড়ে গেল। এমনই অভিযোগ উঠেছে কোতুলপুরে। সেখানে দলীয় কর্মীদের নিয়ে ঠাসাঠাসি ভিড়ে ‘মহামিছিলে’ ছিলন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা।

Advertisement

শ্যামলবাবুর দাবি, ‘‘১৫ হাজার মানুষ মিছিলে ছিলেন।’’ কিন্তু এতে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হল না? শ্যামলবাবুর দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার একের পর এক সংস্থা বিক্রি করে দিচ্ছে। কর্মী ছাঁটাই করছে। জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদ জানাতে এই মিছিলে মানুষ বৃষ্টির মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যোগ দিয়েছেন। মাস্ক পরেই কর্মীরা এসেছিলেন। যাঁদের আসতে বলিনি, তাঁরাও এসেছেন আবেগের টানে।”

বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হরকালী প্রতিহারের পাল্টা দাবি, ‘‘একশো দিনের কাজ না দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বড়জোর হাজার তিনেক লোক টেনেছিল তৃণমূল। কিন্তু তাতেও সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় রয়েছে।’’

Advertisement

বাঁকুড়া সদর মহকুমার সব ব্লকেই তৃণমূলের মিছিলে ভালই ভিড় ছিল। কোথাও নিরাপদ দুরত্বের বালাই ছিল না বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের অভিযোগ, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতেও তৃণমূল সতর্কতা বিধি মানছে না।’’

মিছিল হয় তালড্যাংরা, হাড়মাসড়া, বিবড়দা, তালড্যাংরা বাজার, পাঁচমুড়া বাজার ও সাবড়াকোনে মিছিল ও পথসভা হয়। পাত্রসায়রেও মিছিল হয়। বড় মিছিল হয় খাতড়া বাজার, মুকুটমণিপুর ও সারেঙ্গায়। রাইপুর ব্লকের দুন্দার, সোনাগাড়া, ধানাড়া পঞ্চায়েতে মিছিল হয়। ছিলেন সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু। সেখানেও স্বাস্থ্যবিধি ভাঙার অভিযোগ ওঠে। মৃত্যুঞ্জয়বাবুর দাবি, ‘‘সবাইকে মাস্ক পরে আসতে বলা হয়েছিল। তবে কখনও সখনও ভিড়ে লোকজন কাছাকাছি চলে এসেছিলেন।’’

পুরুলিয়া জেলাতেও বহু জায়গায় মিছিলে স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগ সামনে এসেছে। পুঞ্চায় মিছিলে ছিলেন দলের কো-অর্ডিনেটর তথা সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, বলরামপুরে দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি প্রতিমা সরেন প্রমুখ। মিছিল হয় কাশীপুর, রঘুনাথপুর, নিতুড়িয়ার রায়বাঁধে। নিতুড়িয়ায় মিছিলের পরে বিজেপি থেকে ৭০টি পরিবার তৃণমূলে যোগ দেন বলে দাবি করা হয়েছে। মিছিল চলে জয়পুর, ঝালদার সমবায় মোড়, কোটশিলা, বোরো, মানবাজারের ইন্দকুঁড়িতে। পুরুলিয়া শহরের রাধাকৃষ্ণমোড়ে প্রতিবাদসভা হয়।

বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী দাবি করেন, তৃণমূল যাই বলুক, কেন্দ্রীয় সরকার যে তাঁদের পাশে রয়েছেন, তা মানুষ জানে। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আমরা কর্মসূচি করলে স্বাস্থ্যবিধি মানছি না বলে তৃণমূলের সরকার অভিযোগ তোলে, মামলা করে। এখন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না।’’ তবে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র নবেন্দু মাহালির দাবি, ‘‘বিজেপি লকডাউনের সময়েই নিয়ম বিধি উড়িয়ে পথে নেমেছিল। আমরা এত দিন পরে দলের নির্দেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই মিছিল করেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement