কাজল শেখ। িনজস্ব চিত্র
নানুর ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি কাজল শেখের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে দলের অন্দরে। তাঁর ওই পোস্ট দলের নেতাদের অস্বস্তি বাড়িয়েছে বলেও সূত্রের খবর।
গরু পাচার মামলায় জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জেলে যাওয়ার পরেই হৃষ্টপুষ্ট বাঘের পাশাপাশি একটি রুগ্ণ বাঘের ছবি-সহ 'চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়’ ক্যাপশন পোস্ট করে দলকে অস্বস্তির মুখে ফেলেছিলেন কাজল শেখ। মঙ্গলবার ফের নিজের ওয়ালে তিনি লিখেছেন, ‘কোনও অসাধু ব্যক্তির সোনার খাটেও ঘুম আসে না। তবে সাধু ব্যক্তির ক্ষেত্রে তা একদমই উল্টো। সৎ হলে শূন্য খাটেই চিন্তাহীন রাত্রি কাটানো যায়’ জাতীয় লেখা পোস্ট করেছেন। ( আনন্দবাজার অবশ্য ওই পোস্টের সত্যতা যাচাই করে নি)। পোস্টে কারও নাম ন-থাকলেও দলের একাংশের মতে, কাজলের ‘নিশানা’য় অনুব্রতই। ওই পোস্ট প্রকাশ্যে আসতেই দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ তৃণমূল বিড়ম্বনায় পড়েছে। কাজল যদিও দাবি করেছেন, ‘‘আমি নির্দিষ্ট করে কারো উদ্দেশে ওই পোস্ট করিনি। এর আগেও অনেক গুণী ব্যক্তি ওই ধরনের কথা বলে গিয়েছেন। আমার সেটা বাস্তব মনে হয়েছে। তাই পোস্ট করেছি।’’
কাজল এই দাবি করলেও দলের একাধিক নেতা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জেলার রাজনীতিতে কাজল এবং জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সমীকরণ কখনওই ‘মসৃণ’ ছিল না। নানা কারণে কাজল দলে দীর্ঘদিন ‘কোণঠাসা’ হয়েছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনের পরে অবশ্য কাজলকে ব্লক কার্যকরী সভাপতির পদ দিয়ে ফের সক্রিয় করেন অনুব্রত। কিন্তু, জ্বন্দ্বের চোরাস্ত্রো তাতেও থামেনি বলেই তৃণমূল সূত্রে জানা যায়। বিভিন্ন সময় কাজলকে সমাজমাধ্যমে বিতর্কিত পোস্ট এবং মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে।
এই নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, ‘‘আগে আমরা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বলতাম। তৃণমূল নেতারা উড়িয়ে দিতেন। আজ ওই পোস্ট আমাদের বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করে দিল। একদিন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে দলটা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে।’’ তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে কে কী পোস্ট করছেন, তা নিয়ে দলের মুখপাত্র হিসাবে কিছু বলতে পারব না। যিনি পোস্ট করেছেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।’’