রঘুনাথপুরে সেই অনুষ্ঠানের ভিড় নিয়ে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
স্বাস্থ্য-বিধি না মেনে দলবদলের অনুষ্ঠান করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকেলে পুরুলিয়ার রঘুনথপুর শহরে পুরসভার কমিউনিটি হলে অনুষ্ঠানটি হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, বিজেপি সমর্থক প্রায় তিনশো পরিবার এ দিন তাদের দলে যোগ দিয়েছে। যদিও সে দাবি উড়িয়ে বিজেপি অভিযোগ করেছে, তৃণমূলের ওই কর্মসূচিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় ছিল না। অনেকের মুখে ছিল না ‘মাস্ক’।
বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক বাণেশ্বর মুখোপাধ্য়ায় বলেন, ‘‘রঘুনাথপুর শহরে পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এই অবস্থায় যে ভাবে স্বাস্থ্য-বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তৃণমূল কর্মসূচি করল, তাতে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা।’’ তবে স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই অনুষ্ঠান হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের সদ্য় নিযুক্ত পুরুলিয়া জেলা সভাপতি গুরুপদ টুডুর।
বিজেপির বিরুদ্ধে সোমবার স্বাস্থ্য-বিধি ভাঙার অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পরে, তাঁর আরোগ্য কামনা করে রঘুনাথপুর থানার মৌতোড় গ্রামের কালী মন্দিরে পুজো দেন বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। উপস্থিতি ছিলেন শতাধিক কর্মী-সমর্থক। তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, ওই জমায়েতে মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ব। অধিকাংশ নেতা-কর্মীর মুখে ছিল না ‘মাস্ক’।
এ দিন যে কমিউনিটি হলে তৃণমূলের কর্মসূচি হয়েছে, সেটি মাঝারি মাপের। গুরুপদবাবুর দাবি, অনুষ্ঠানে রঘুনাথপুর বিধানসভা এলাকার প্রায় তিনশো পরিবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রের বক্তব্য, মাঝারি হলে প্রচুর লোকজন থাকায় গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে বসতে দেখা গিয়েছে অনেককে। কারও মুখে ‘মাস্ক’ ছিল না। কারও ‘মাস্ক’ ঝুলছিল থুতনির কাছে। নবাগতদের তৃণমূলের পতাকা ধরানোর সময়ে আসন ছেড়ে মঞ্চের আশেপাশে জড়ো হন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। ফলে, ভিড় হয়ে যায়।
বিজেপির জেলা সম্পাদক বাণেশ্বরবাবুর দাবি, তাঁদের কোনও কর্মী-সমর্থক তৃণমূলে যাননি। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল নিজেদের দলের লোকের হাতে পতাকা ধরিয়ে একই কুমিরছানা বার বার দেখানোর নাটক করছে। নতুন দায়িত্ব পেয়ে নেতারা চাকরি বাঁচাতে মরিয়া হয়ে পড়েছেন। তাই মানুষের জীবন বিপন্ন করছেন।’’
তৃণমূলের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি, বিদায়ী পুরপ্রধান মদন বরাট, প্রাক্তন পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্য়ায়, যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুশান্ত মাহাতো প্রমুখ। তাঁরা এই ব্যাপারে কোনও কথা বলতে চাননি। তবে গুরুপদবাবুর দাবি, ‘‘উপস্থিত নেতা- কর্মীদের নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরে বসতে বলা হয়েছিল। দেখেছি, সবাই সে কথা মেনে চলেছেন।’’