দেশবন্ধু রোড এলাকায় নির্মীয়মাণ বহুতলের চৌবাচ্চায় জমা জলে এডিসের লার্ভা। ছবি তুলে রাখছেন স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্মী। —নিজস্ব চিত্র।
আরও তিন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলল পুরুলিয়ায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই তিন জনও শহরের দেশবন্ধু রোড এলাকারই বাসিন্দা। ওই এলাকারই ৪১ জন চলতি মরসুমে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। আরও তিন নির্মাণ শ্রমিকেরও ডেঙ্গি হয়েছে দেশবন্ধু রোড এলাকায়। তাঁরা ভিন জেলার বাসিন্দা। মিলিয়ে ধরলে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪।
এ দিকে, দেশবন্ধু রোডে শহরের ১ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে পর পর ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিস মেলায় পুরসভার সঙ্গে বৈঠক করেছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, ওই এলাকায় এখনও সচেতনতার অভাব রয়ে গিয়েছে। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাস পাত্র বলেন, ‘‘সোমবার শহরে বাচ্চাদের একটি স্কুলে গিয়েছিলাম। দেখা গিয়েছে, ডাস্টবিন আর বিভিন্ন ছোট-বড় পাত্রে জমা জলে এডিস মশার লার্ভা গিজগিজ করছে। জমা জল সরানো ও স্কুলের চারপাশে ওষুধ স্প্রে করার জন্য পুরসভায় চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
সম্প্রতি শহরের ডেঙ্গি-পরিস্থিতি দেখতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি পুরুলিয়ায় ঘুরে গিয়েছেন। তিনি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পদস্থ কর্তা, পুরসভার ডেঙ্গি সংক্রান্ত নজরদারির দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল বিভাসরঞ্জন দাস ও বিপর্যয় ব্যবস্থাপন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর সম্পূর্ণ কর্মকারের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিভাস জানান, এখনও শহরের একটি এলাকাতেই ডেঙ্গি সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে স্বাস্থ্য দফতরের পরিদর্শনে শহরের অন্য ওয়ার্ডেও জমা জলে এডিস মশার লার্ভা মিলেছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা চিন্তিত বলে জানিয়েছেন বিভাস। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিত মাইকে প্রচার, স্প্রে, ব্লিচিং ছড়ানো, জমা জল সরানো—সবই করছি। কিন্তু বাসিন্দাদেরও সচেতন হতে হবে। দেখতে হবে ঘরের কোথাও জল জমে রয়েছে কিনা।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মহামারি বিশেষজ্ঞ সতীনাথ ভুঁইয়া জানান, যে এলাকায় সব থেকে বেশি আক্রান্তের হদিস মিলেছে, সেখানে গিয়ে নির্মীয়মাণ বাড়িগুলিতে জমা জলে এডিসের লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। বিভাস জানান, ওই বাড়িগুলিকে নোটিস পাঠানো হচ্ছে। তবে জ্বর থাকলেও পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি।