Raghunathpur Municipality

পড়ে রয়েছে টাকা, আঁধারে শহরের রাস্তা

পুরসভা সূত্রে খবর, মার্চে টাকা পাওয়ার পরে কাজের দরপত্র ডাকা হয়। একটি সংস্থা কাজের বরাত পেলেও তা নিয়ে আপত্তি তোলেন শাসকদলের পুর-প্রতিনিধিদের একাংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:০৯
Share:

রঘুনাথপুর পুরসভা। ছবি: সংগৃহীত।

ছ’মাস ধরে পড়ে রয়েছে গ্রিন সিটি মিশন প্রকল্পের কোটিরও বেশি টাকা। অথচ রঘুনাথপুর পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের রাস্তা ডুবে অন্ধকারে। শহর আলোকিত করতে টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরেও কেন তা কাজে লাগানো হচ্ছে না, তা নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা।

Advertisement

সূত্রের খবর, শহর জুড়ে আলো লাগানোর কাজের দরপত্র আহ্বান করেছিল পুরসভা। তবে যে সংস্থা কাজের বরাত পায়, তাকে নিয়ে শাসকদলের একাংশই আপত্তি তোলে। সেই টানাপড়েনে এগোয়নি কাজ। পুরপ্রধান তরণী বাউরির দাবি, ”আগের দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। কারণ, যে সংস্থা কাজ পেয়েছিল দেখা গিয়েছে তাদের কাজের যোগ্যতা নেই। নতুন ভাবে দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” তবে শাসকদলেরই কিছু পুর-প্রতিনিধির দাবি, যে সংস্থা কাজের বরাত পেয়েছিল, তাকে দিয়েই পুরপ্রধান শহরে আলো লাগানোর কাজ করানোর চেষ্টা করেন বলে সমস্যা তৈরি হয়।

কী ঘটেছিল? সূত্রের খবর, গ্রিন সিটি মিশন প্রকল্পে পাওয়া ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রঘুনাথপুরের কলেজ রোড, ব্লকডাঙা, বাঁকুড়া রোড, শ্মশান, নতুন কলোনি, আইটিআইয়ের রাস্তা, জয়চণ্ডী পাহাড়ে যাওয়ার রাস্তা-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যেখানে পথবাতি নেই, সেখানে বিদ্যুতের খুঁটি-সহ পথবাতি লাগানোর পরিকল্পনা হয়। পাশাপাশি, বিভিন্ন ওয়ার্ডে অকেজো পথবাতি বদলে নতুন আলো লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয় পুরকর্তৃপক্ষ।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে খবর, মার্চে টাকা পাওয়ার পরে কাজের দরপত্র ডাকা হয়। একটি সংস্থা কাজের বরাত পেলেও তা নিয়ে আপত্তি তোলেন শাসকদলের পুর-প্রতিনিধিদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি ছিল, সংস্থাটির কাজের যোগ্যতা নেই। তা ছাড়া, বর্তমান পুরপ্রধান পুরসভায় প্রশাসক থাকার সময়েই ওই সংস্থাই ৪৫ লক্ষ টাকার আলো সরবরাহ করেছিল। তবে পরবর্তী সময়ে সেই আলোর খোঁজ মেলেনি বলে অভিযোগ। নতুন পুরবোর্ডকে আরও পাঁচ লক্ষ টাকার আলো কিনতে হয়।

পুরসভায় আলোর দায়িত্বে থাকা তৃণমূলের পুর-প্রতিনিধি মৃত্যুঞ্জয় পরামানিক বলেন, ”গ্রিন সিটি মিশন প্রকল্পে একটি নামী সংস্থার আলো ব্যবহার করার কথা। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, কাজের বরাত পাওয়া সংস্থা আদৌ ওই সংস্থার আলো সরবরাহের যোগ্য নয়। কিন্তু তারা ভুয়ো নথি জমা দিয়েছিল। অনেকে তাই ওই সংস্থাকে দিয়ে কাজ করানোয় আপত্তি জানান।”

তবে এই দ্বন্দ্বে পুরএলাকার একাধিক রাস্তা অন্ধকারে ডুবে থাকায় বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েছেন পুরকর্তৃপক্ষ। রঘুনাথপুরের কংগ্রেস শহর সভাপতি তারকনাথ পরামানিকের অভিযোগ, ”উন্নয়নমূলক কাজ থেকে তৃণমূলের ‘কাটমানি’ খাওয়ার জন্যই টাকা থাকা সত্ত্বেও শহরে আলো লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে পুরসভা।”

তাঁর আরও দাবি, যে সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছিল, তারা ভুয়ো নথিপত্র জমা দিয়ে কাজ করতে চাইছে সেটা বুঝতেই পুরসভার কয়েক মাস পেরিয়ে গেল। ফল, শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের একাধিক রাস্তা অন্ধকারে ডুবে থাকছে। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পুরবাসীকে। পুরপ্রধানের তবে আশ্বাস,”দ্রুত দরপত্র আহ্বান করে শহর জুড়ে পথবাতি লাগানোর কাজ শুরু হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement