রঘুনাথপুরে মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের ত্রিপুরা দখলের স্বপ্ন কোনওদিন বাস্তব হবে না— শহিদ সম্মান যাত্রায় পুরুলিয়ার বলরামপুরে গিয়ে এই দাবিই করলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর হয়ে পুরুলিয়া শহর ছুঁয়ে বলরামপুরে যান তিনি।
বলরামপুরের সরাই ধর্মশালায় শহিদ সম্মান যাত্রায় যোগ দেন। সেখানে ছিলেন বলরামপুরের বিজেপির তিন ‘শহিদ’ ডাভা গ্রামের দুলাল কুমারের স্ত্রী মনিকা কুমার, সুপুরডি গ্রামের ত্রিলোচন মাহাতোর বাবা হাড়িরাম মাহাতো ও আমট্য়াড় গ্রামের জগন্নাথ টুডুর এক পরিজন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে, দুলালের দেহ বিদ্য়ুতের হাইটেনশন তারের টাওয়ারে এবং ত্রিলোচনের ঝুলন্ত দেহ গাছের ডালে পাওয়া যায়। তার আগে, পথ দুর্ঘটনায় মৃত্য়ু হয়েছিল জগন্নাথের। তবে বিজেপির অভিযোগ, পরিকল্পনা করে দুর্ঘটনা ঘটনানো হয়েছিল। এ দিন ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোর্তিময় সিং মাহাতো, বলরামপুরের বিধায়ক বাণেশ্বর মাহাতো, বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী প্রমুখ। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে আদালতের রায়কে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। এই রায়ে আমরা খুশি।’’
তার আগে, রঘুনাথপুরের ব্লকডাঙা এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনের মাঠে একটি সভায় যোগ দেন সুভাষবাবু। সেখানে কর্মীদের তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মসূচিগুলি নিয়ে আরও বেশি প্রচারের পরামর্শ দেন। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী মাথা পিছু পাঁচ কেজি চাল রেশনে দিচ্ছেন, বিনামূল্য়ে করোনার টিকা দিচ্ছেন ও গরীব লোকজনদের আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছেন। কর্মীদের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘‘আপনারা রেশন দোকানে গিয়ে লোকজনদের কাছে জানতে চান, তাঁরা ঠিক ভাবে প্রধামনন্ত্রীর দেওয়া চাল পাচ্ছে কি না। টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়ে বলুন, প্রধানমন্ত্রী বিনামূল্যে সকলকে টিকা দিচ্ছেন। এমন ভাবে প্রচার করুন যাতে লোকজন বুঝতে পারেন প্রধানমন্ত্রী এই সমস্ত সুবিধা বিনামূল্যে লোকজনের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন।”
আবাস যোজনা নিয়ে ইতিমধ্য়েই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। সে প্রসঙ্গ ছুঁয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘যে সব যোগ্য ব্যক্তি আবাস যোজনায় সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাড়ি পাননি, তাঁদের তালিকা পঞ্চায়েত ধরে তৈরি করুন। পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও যাঁরা আবাস যোজনার সুবিধা পেয়েছেন, তাঁদের বাড়ির ছবি তুলে ধরুন। সে কথা প্রচার করুন।’’
তবে তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেন, ‘‘একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই রাজ্যের প্রকৃত উন্নয়ন করছেন ও গরিব মানুষজনের কাছে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছেন। সুভাষবাবুরা তিন বছর হতে চলল সাংসদ হয়েছেন। কিন্তু পুরুলিয়ার উন্নয়নে তাঁদের কোনও ভূমিকাই নেই। পুর-নির্বাচন আসন্ন বুঝে মানুষজনকে বিভ্রান্ত করতে আবার মাঠে নেমেছেন।”