অগত্যা: স্মার্টফোন সবার বাড়িতে নেই। তাই স্কুলে গিয়ে বন্ধুর মোবাইল থেকে ফল দেখা। পুরুলিয়া ২ ব্লকের খুদিবাঁধ উচ্চ বিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র
দুই জেলার জঙ্গলমহলের অনেক এলাকায় এখনও মোবাইল পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ শোনা যায়। এই পরিস্থিতিতে অনলাইনে মাধ্যমিকের ফল জানতে বুধবার ওই সব এলাকার অনেক পড়ুয়াই সমস্যায় পড়ল। কেউ বাড়ি থেকে অনেক দূরে গিয়ে ইন্টারনেটের সংযোগ পেল। কেউ বা স্মার্টফোন না থাকায় এ দিন ফল জানতেই পারল না বলে অভিযোগ। আবার স্কুলের সামগ্রিক ফল জানতে না পারায় অসন্তুষ্ট অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষও।
ইন্টারনেট-সংযোগ ঠিক না থাকায় এ দিন বিকেল ৩টে পর্যন্ত স্কুলের ফলাফল জানতে পারেননি রানিবাঁধের ডাবরি এসএসবি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রধানশিক্ষক সঞ্জীবকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘ইন্টারনেট পরিষেবা ঠিক না থাকায় চেষ্টা করেও জানতে পারলাম না স্কুলের সবাই কেমন ফল করল! অনেক পড়ুয়ার বাড়িতে স্মার্টফোন থাকায় পরিবারের লোকজন ফল জানতে পারেননি।’’
রানিবাঁধ হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক শম্ভুনাথ পাইন বলেন, ‘‘রানিবাঁধ বাজারেও ইন্টারনেটের স্পিড ভাল নেই। পড়ুয়ারা জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন গ্রামে থাকে। সেখানে তো ইন্টারনেটের পরিষেবাই নেই। ফলে, অনেকেই ফলাফল জানতে পারেনি।’’
একই কারণে ফল জানতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে সিমলাপালের পুটিয়াদহ হাইস্কুলের ছাত্রী রাখি গড়াই, খাতড়ার বনকাটি হাইস্কুলের ছাত্র অভিষেক মহাপাত্রদের। তারা বলে, ‘‘গ্রামে ইন্টানেট পরিষেবা নেই। গ্রাম থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ফাঁকা মাঠে গিয়ে ফলাফল জানতে পারি।’’ ঝালদা ২ ব্লকের চ্যেকা গ্রামের পরীক্ষার্থী গোবর্ধন মাঝি জানায়, তাদের স্মার্টফোন নেই। গ্রামের এক দাদার ফোনে কয়েক ঘণ্টা পরে সে ফল জানতে পেরেছে। তবে স্কুল শিক্ষা দফতরের খাতড়া মহকুমার সহকারী পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অনিমেষ শতপথী বলেন, ‘‘এসএমএসের মাধ্যমেও মাধ্যমিকের ফল জানা যাচ্ছে।’’
স্কুলের সার্বিক ফল জানার কোনও ব্যবস্থা না করায় ক্ষোভের সুর শোনা গিয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের মধ্যে। বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক ব্যোমকেশ দাস বলেন, ‘‘আগে মার্কশিটের বান্ডিলের সঙ্গেই এক নজরে স্কুলের সমস্ত পরীক্ষার্থীর ফল ছাপানো কাগজ দেওয়া হত শিক্ষকদের। এ বার অন্তত অনলাইনে স্কুলগুলির জন্য তেমন কিছু ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। সংগঠনের তরফে আগেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে এ ব্যাপারে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল।’’
কাশীপুর জনার্দন কিশোর মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষিকা মিতালি চট্টোপাধ্যায়, মানবাজার গার্লস হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির মুখপাত্র মনোজ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমস্ত পরীক্ষার্থীর ফল জানতে পারলে ভাল হত।’’ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি সত্যকিঙ্কর মাহাতো অবশ্য বলেন, ‘‘এ বার পরিস্থিতি অন্য রকম। স্কুলে স্কুলে ২২ জুলাই মার্কশিট পৌঁছে যাবে।’’
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |