পড়ুয়াদের বিক্ষোভ হস্টেলের সামনে। বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্বভারতীতে। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্বভারতীর এক পড়ুয়ার রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল বোলপুরের আম্রপালি হস্টেলে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই হস্টেল থেকে উদ্ধার হয় বিশ্বভারতীয় পড়ুয়া অনামিকা সিংহের দেহ। আদতে বারাণসীর ওই বাসিন্দা আম্রপালি হস্টেলেরই আবাসিক ছিলেন। হস্টেলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পুলিশ এবং বিশ্বভারতী প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন পড়ুয়াদের একাংশ। রাতে পুলিশ আধিকারিক এবং বিশ্বভারতীর কর্মসচিব হস্টেলে পৌঁছলে তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
পড়ুয়াদের প্রশ্ন, বিশ্বভারতীর কোনও আধিকারিককে সঙ্গে না নিয়েই পুলিশ কী ভাবে হস্টেলে প্রবেশ করল? হস্টেলের মূল গেটে কেন সিসি ক্যামেরা নেই, সেই প্রশ্নও তোলা হয়। পড়ুয়াদের তরফে দেবমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিকেলে ঘটনা ঘটেছে, আর পুলিশ রাতের বেলা হস্টেলে এসেছে, তা-ও কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিককে সঙ্গে না নিয়ে। হস্টেলের গেটে সিসি ক্যামেরা নেই। আমরা এর বিচার চাই।”
পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে রাতে হস্টেলে যান বীরভূম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (বোলপুর) রানা মুখোপাধ্যায় এবং বোলপুরের এসডিপিও রিকি আগরওয়াল। তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। পরে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে যান কর্মসচিব অশোক মাহাতো, নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায় এবং ছাত্র পরিচালক গণেশ মালিক। পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তাঁরাও।
ঘটনা প্রসঙ্গে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো বলেন, “এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। আমরা ছাত্রীর পরিবারকে খবর দিয়েছি। হাসপাতালের কারণে হস্টেলে পৌঁছাতে দেরি হয়েছে।” তবে কী কারণে ওই পড়ুয়ার মৃত্যু হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, ওই পড়ুয়া বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বীরভূমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর) বলেন, “ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, বোর্ড বসিয়ে কোনও মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত করা হবে। প্রমাণ লোপাটের ভয়ে হস্টেলের ঘরটি সিল করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে ফরেন্সিক দলকে ডাকা হবে। তদন্তে কোনও ত্রুটি রাখা হবে না।”