—প্রতীকী ছবি।
এক ঝাঁক যুবক-যুবতী। চারধারে জনা কয়েক স্থানীয় বাসিন্দা। তাঁদের লক্ষ করে ওই যুবক-যুবতীর প্রশ্ন, ‘বাড়িতে শৌচাগার আছে?’ ‘মেয়ে কন্যাশ্রী পাচ্ছে?’— শনিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা এ ভাবেই সরকারি নানা প্রকল্পের বিষয়ে খোঁজখবর নিলেন। দিনভর কাটোয়া, কেতুগ্রাম, পূর্বস্থলী, গুসকরা-সহ জেলার নানা প্রান্তে এমন ‘সমীক্ষা’ চালিয়েছেন পড়ুয়ারা।
প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের প্রথম প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সরকারি নানা প্রকল্পের বিষয়ে ‘সমীক্ষা’ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তার পরেই ‘পরিচিতি’ নামে একটি প্রকল্প শুরু হয়। এ দিন সেই প্রকল্পেই চলে এমন সমীক্ষা।
কাটোয়ার শ্রীখণ্ডে আদিবাসীপাড়ায় ৭২টি পরিবারের মধ্যে সমীক্ষা চালান পড়ুয়ারা। নেতৃত্বে ছিলেন, এমজিএনআরজিএস প্রকল্পের জেলা প্রযুক্তি সহায়ক খোন্দেকার সহিদুল ইসলাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুকুমার মণ্ডল। একশো দিনের কাজ, বাড়ির আবেদন করেও না পাওয়া, ১৫টি পরিবারে শৌচাগার না থাকা-সহ নানা বিষয়ে আদরি মুর্মু, সিমল হাঁসদা ,হাসনা সোরেনরা অভিযোগ করেন পড়ুয়াদের কাছে।
নানা অভাব-অভিযোগ নিয়ে দুপুরে বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করেন শ্রীখণ্ড পঞ্চায়েতের প্রধান দীপক মজুমদার ও বিডিও (কাটোয়া ১) মহম্মদ মারগুব ইলমি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সমীক্ষার পরে প্রশাসনিক বৈঠকে বিধবা ভাতা, একশো দিনের কাজ নিয়েও সামান্য কিছু সমস্যার কথা উঠে আসে।
কেতুগ্রামের পাণ্ডগ্রা পঞ্চায়েতের কুলুন গ্রামে একশোটি পরিবারের উপরে সমীক্ষা চলে। বিডিও অরূপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রতিটি বাড়িতেই শৌচাগার আছে। এক জন নবম শ্রেণির ছাত্র সাইকেল পায়নি ও পাঁচ জন বার্ধক্য ভাতা পাননি।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কুড়ি জন পড়ুয়া আউশগ্রামের গুসকরা ২ পঞ্চায়েতের নানা জায়গা পরিদর্শন করে। দেয়াশা গ্রামে গিয়ে বাড়িবাড়ি নানা প্রকল্পের বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। পড়ুয়ারা বৈঠক করেন গ্রামবাসী, পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গেও। একই ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল যায় পূর্বস্থলীর রাজাপুর ভাতশালা গ্রামেও। কৃষ্ণা পাত্র, তৃপ্তি চক্রবর্তী, মিঠুন দাস, সুপ্রিয়া সিংহ নামে কয়েক জন পড়ুয়া বলেন, ‘‘বার্ধক্য ভাতা, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, শৌচাগার তৈরি, একশো দিনের কাজ-সহ নানা প্রকল্প থেকে মানুষ কী রকম সুবিধা পাচ্ছেন, তাইই জেনেছি।’’ ওই দলটির সঙ্গে ছিলেন শিক্ষক নবকুমার মণ্ডল। তাঁর পরামর্শ, ‘‘সরকারি প্রকল্পগুলি কার্ডে ছাপিয়ে বাড়িতে বাড়িতে পাঠানো হলে, আরও বেশি সংখ্যক মানুষ এর সুফল পাবেন।’’