আকাশ চিরে। রবিবার সন্ধ্যায় ছবিটি তুলেছেন তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
হঠাৎ তুমুল ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেল বাঁকুড়া ২ ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম। বাজ পড়ে একজনের মৃত্যু হল বড়জোড়ায়।
রবিবার জামাইষষ্ঠীতে দিনভর প্রবল গরমে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বাসিন্দারা বেজায় কষ্ট পান। সন্ধ্যায় পরিস্থিতি বদলায় বাঁকুড়ায়। মেঘ ঘনিয়ে কালবৈশাখী দাপট দেখাল এই জেলার কয়েকটি এলাকায়। তবে ছিঁটেফোঁটা বৃষ্টি বিশেষ স্বস্তি আনতে পারল না। পুরুলিয়াতেও সন্ধ্যার পরে কিছুটা ঠান্ডা হাওয়া কষ্ট গরমের জ্বালা কমায়।
এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ অল্পক্ষণের জন্য বাঁকুড়া শহর লাগোয়া এলাকায় ঝ়ড় হয়। তাতে বাঁকুড়া ২ ব্লকের কেন্দবনি, লাপুুড়িয়া, করণজোড়া প্রভৃতি গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে খবর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু কাঁচাবাড়ি পড়ে গিয়েছে। বাজ পড়ে এলাকায় গোবাদি পশু মারা গিয়েছে। গাছপালাও ভেঙে পড়ে। কেন্দবনি গ্রামের কৃষ্ণ ঘোষ গ্রামের একটি পোল্ট্রি ফার্মে ছিলেন। ঝড়ের ধাক্কায় ফার্মের দেওয়াল চাপা পড়ে তিনি জখম হন। করণজোড়া গ্রামে তারাপদ তন্তুবায়ের বাড়িতে একটি গাছ ভেঙে পড়ে। তবে ওই ঘটনায় হতাহতের খবর নেই।
বাঁকুড়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আলোক সিং বলেন, ‘‘ঝড়ে বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, আঝ সোমবার বিডিও-কে নিয়ে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন।
অন্যদিকে বড়জোড়ায় বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের। আহত হন আরও একজন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সুরজ খাঁ (২৮) স্থানীয় হাটআশুরিয়ার কোটালপুকুর গ্রামের বাসিন্দা।
এ দিকে, লাফিয়ে লাপিয়ে পারদ বাড়ছে পুরুলিয়ায়। এ দিনই চলতি মরসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠল পুরুলিয়ায়। জেলা আবহাওয়া পরিমাপক কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন তাপমাত্রার পারদ উঠেছে ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
চলতি বছরে ২২ এপ্রিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তারপর গরম কিছুটা ঢিমেতালে ব্যাট করছিল। মাঝে মধ্যে কালবৈশাখী ও বৃষ্টির পেসারে গরম থতমত খেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু গত শুক্রবার থেকে তরতর করে বাড়তে শুরু করে জেলার তাপমাত্রা।
শুক্রবার ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছোঁয় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ। শনিবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রবিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা তাও ছাড়িয়ে যায়। এ দিন জামাইষষ্ঠীতে সকালের দিকে পুরুলিয়ার বাজারগুলিতে ভিড় থাকলেও তা ছিল সকালের দিকে। বেলা বাড়তে রাস্তাঘাটে লোকজন কমে যায়। একে রবিবারের বাজার, তায় দোসর তেতাল্লিশের উত্তাপ, এর জেরে রাস্তাঘাট কার্যত সুনসান হয়ে যায়।