স্থাপত্যের অদূরে বনভোজনের আয়োজন। নিজস্ব চিত্র।
পর্যটকদের ভিড়ে গড়পঞ্চকোট পাহাড়ের প্রত্নস্থল ও স্থাপত্যগুলি সংরক্ষণের কাজ কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে, দাবি রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের। সঙ্গে, পাহাড় জুড়ে ছড়িয়ে থাকা আর্বজনার স্তূপও দৃশ্য দূষণ ঘটাচ্ছে বলেও অভিযোগ কমিশনের। স্থানীয় ধারাকল্যাণ সমিতির সম্পাদক দিলীপকুমার দে-র তবে দাবি, দু’দিন অন্তর সমিতির সদস্যেরা পাহাড়ে পড়ে থাকা আর্বজনা সাফাই করেন।
পঞ্চকোট রাজবংশের প্রাচীন রাজধানী গড়পঞ্চকোটে নানা জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে স্থাপত্যের নানা নিদর্শন। ২০২২-র ফেব্রুয়ারিতে পাহাড়ের পাদদেশের জোড় বাংলো, রানিমহল তথা অন্দরমহল, কাছারিবাড়ি, পঞ্চরত্নের মন্দির ও আরও কয়েকটি মন্দির-সহ মোট ন’টি স্থাপত্য ও প্রত্নস্থলের সংরক্ষণের কাজ শুরু করে হেরিটেজ কমিশন। কাজে বরাদ্দ হয় প্রায় চার কোটি টাকা।
পর্যটনের মরসুম শুরু হলে পর্যটকদের ভিড়ে সংরক্ষণের কাজে ব্যাঘাত ঘটবে বলে আশঙ্কা করেছিল কমিশন। কমিশনের সংরক্ষণ স্থপতি অঞ্জন মিত্র জানান, কমিশনের তরফে জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে সংরক্ষণস্থলে পর্যটকদের আনাগোনা নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সে কাজ হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, “পর্যটকেরা অনেকেই স্থাপত্যগুলিতে উঠে পড়ছেন। স্থাপত্যগুলির পাশেই পিকনিক চলছে। এতে সংরক্ষণের কাজ কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে।”
তবে বেশ কয়েকটি স্থাপত্যের চারপাশে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। সেখানে নজরদারিতে রয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। স্থাপত্যের কাছে যেতে পর্যটকদের আটকানো হচ্ছে। তবে তাতে বিশেষ লাভ হচ্ছে না দাবি করে সংরক্ষণেরর দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার ডিরেক্টর শ্যামল রাজবংশী বলেন, “দলে দলে পর্যটকেরা পাহাড়ে আসার দরুণ কাজ চলছে অত্যন্ত ধীরে। পুলিশ, প্রশাসন সংরক্ষণ সাইটে তাঁদের আটকানোর চেষ্টা চালালেও অনেকে তাতে কান দিচ্ছেন না।”
প্রশাসনের তবে দাবি, পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে বড়দিন থেকেই পর্যটকদের আনাগোনা নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “সংরক্ষণের কাজ মসৃণ ভাবে চালাতে পর্যটকদের পাহাড়ে আসা পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। কিন্তু কলকাতা থেকে শুরু করে ঝাড়খণ্ড থেকেও পর্যটকেরা আসেন। আগাম প্রচার না করে পর্যটনের মরসুমে পর্যটকদের আসা বন্ধ করা বেশ কঠিন।” তা ছাড়া, আচমকা পর্যটকদের আসা বন্ধ করা হলে আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে পুলিশের তরফেও প্রশাসনকে জানানো হয়েছে বলে দাবি।