প্রতীকী ছবি।
বীরভূমে এ বার ‘বেসুরো’ ব্লক সভাপতি। শনিবার নলহাটি ২ ব্লকে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের জনসভায় জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে একটি সভার আয়োজন করা হয়। নবহিমাইতপুর অনুকূল আশ্রমে ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলার সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য-সহ বিভিন্ন বুথের সভাপতি, অঞ্চল সভাপতিরা।
সভায় ব্লক সভাপতি বিভাসচন্দ্র অধিকারী বুথ ধরে ধরে সমস্যার কথা শোনেন। সমাধানেরও আশ্বাস দেন। জনসভায় বেশি সংখ্যক জমায়েতের নির্দেশ দেন। তার পরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘দলের কিছু নেতা মোটা টাকায় বুথ সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতি পদ বিক্রি করছেন। অবিলম্বে তাঁদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
এ দিন দল ও প্রশাসনের কার্যকলাপ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিভাস। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সব সময় যদি জেলাশাসক, বিডিওদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন তাহলে নেতারা কী করবেন? ফলে দলের নেতারা সংগঠনকে মজবুত করতে পারবে না।’’ তাঁর মতে, ‘‘দলে যেমন সব লোক সৎ হয় না। প্রশাসনেও সবাই সৎ নয়। তাই দলকে আগে মজবুত করতে হয়।’’ তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী সহজলভ্য হলে নেতাদের সংগঠন করা মুশকিল হয়ে উঠছে। বিভাসের কথায়, ‘‘যে সমস্ত জেলা সভাপতি লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি করে দিচ্ছেন তাদের কড়া হতে দমন করতে হবে। দিদির জনপ্রিয়তা আছে। কিন্তু এই সমস্ত লোকগুলোকে দেখে মানুষের পছন্দ হয় না।’’
বিভাসকে নিয়ে আগেও জল্পনা বেধেছে। কিছু দিন আগেই তাঁর আশ্রমে ঘুরে গেছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। বছরখানেক আগে এসেছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়র মতো শীর্ষ বিজেপি নেতা। তাঁর আশ্রমে মুখ্যমন্ত্রীর না আসা নিয়েও এ দিন ক্ষোভ জানিয়েছেন বিভাস। তাঁর কথায়, ‘‘অনুকূল ঠাকুরের সৎসঙ্গে ছয় কোটি মানুষ দীক্ষিত। আমাদের সংগঠন চায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্রমে আসুন। মুখ্যমন্ত্রীকে ঠাকুরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আশ্রমে আসার জন্য চারবার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি একবারও আসেননি। শুধুমাত্র একবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পাঠিয়েছিলেন। তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। ওঁর একবার আসা প্রয়োজন। মানুষকে বোঝানো উচিত উনি সর্বধর্মের মানুষকে ভালবাসেন।’’
বিভাসের এ দিনের মন্তব্যের পরে তিনি বিজেপিতে যাচ্ছেন কি না তা নিয়ে ফের জল্পনা বেধেছে। তিনি অবশ্য নিজেই এ দিন বলেন, ‘‘কোনও দিন বিজেপিতে যাব না। মুখ্যমন্ত্রীর সুতির শাড়ি ও হাওয়াই চটি হচ্ছে ত্যাগের উৎস। তাঁকে দেখে দলে এসেছি। দল ও সংগঠন করব। আর রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী সরকার গড়বেন।’’
তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার মনে হয় ব্লক সভাপতি ঠিক কথা বলেননি। যদি কিছু বলার থাকে তাহলে দলের মধ্যে আলোচনা করে সমধান করাই ভাল। প্রয়োজনে তাঁকে দল সব রকম সহযোগিতা করবে।’’