প্রতীকী ছবি
পুরুলিয়া শহরে ক্রমশ বাড়ছে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা। রবিবারই পুরুলিয়া শহরে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ জন। রেলশহর আদ্রাতেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়া পুরএলাকা ও আদ্রা রেল শহরে টানা চার দিনের ‘লকডাউন’ জারি করল জেলা প্রশাসন।
রবিবার জেলা প্রশাসনের এক জরুরি বৈঠকের পরে বিকেলে জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘সোমবার বিকেল চারটে থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত সম্পূর্ণ ‘লকডাউন’ করা হচ্ছে পুরুলিয়া পুরশহর ও আদ্রা রেলশহরে। কেবলমাত্র জরুরি পরিষেবা ও ওষুধের দোকানকেই ‘লকডাউন’-এর আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। ওই দুই শহরে চার দিন আনাজের বাজার ও মুদিদোকানও বন্ধ থাকবে। তার মধ্যে বুধবার সারা রাজ্যেই ‘লকডাউন’ থাকছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে পুরুলিয়া শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রথম করোনা-আক্রান্তের খোঁজ মেলে। ধীরে ধীরে এই শহরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে রবিবার পর্যন্ত ৩০ জন হয়ে গিয়েছে। আক্রান্তদের বেশির ভাগের সঙ্গেই শহরের একটি বিয়েবাড়ি-যোগ রয়েছে। এমনকি ওই বিয়েবাড়ি থেকে সংক্রমিত হওয়ার খবর মিলেছে বিভিন্ন ব্লকের আরও ছ’জন বাসিন্দার।
এ দিন পুরুলিয়া শহরে ধরা পড়া ১৬ জন করোনা-আক্রান্তের মধ্যে ১৪ জনেরই ওই বিয়েবাড়ি-যোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর বলেন, ‘‘১৪ জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। মনে করা হচ্ছে, তাঁদের সবার সঙ্গেই বিয়েবাড়ি-যোগ রয়েছে। সংক্রমিতদের পরিবারের কেউ না কেউ আগে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।’’ তিনি জানান, ওই ১৪ জনের এলাকা আগে থেকে কনটেনমেন্ট জ়োনের আওতায় রয়েছে।’’
এ দিন আক্রান্ত বাকি দু’জনের বাড়ি পুরুলিয়া শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হুচুকপাড়া ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নর্থলেক রোডে। তাঁদের আবাসনগুলি কনটেনমেন্ট জ়োনের আওতায় ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহকুমাশাসক (পুরুলিয়া সদর) প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী।
এক দিকে রাস্তাঘাট ও বাজারে থিকথিকে ভিড়, অন্য দিকে পাল্লা দিয়ে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে— এর পরেই বৈঠক করে প্রশাসন দুই শহরে ‘লকডাউন’-এ সিদ্ধান্ত নেয়। পুরুলিয়ার প্রশাসক সামিমদাদ খান বলেন, ‘‘যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে ‘লকডাউন’ করা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না।’’
প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে শহরের বিভিন্ন মহল। ‘পুরুলিয়া নাগরিক মঞ্চ’-এর মুখপাত্র ঋতুরাজ দে বলেন, ‘‘অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তাই আমরা প্রশাসনের কাছে টানা ১৪ দিন ‘লকডাউন’-এর আবেদন জানিয়েছিলাম।’’ ওষুধ বিক্রেতাদের সংগঠন‘বিসিডিএ’-র পুরুলিয়া জ়োনের সভাপতি আনন্দ কেডিয়া বলেন, ‘‘প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’