প্রতীকী ছবি।
এ যেন উলটপুরাণ। প্রশ্নটা ছিল ১০০ শতাংশ উচ্চ-মাধ্যমিক পাস ছাত্র ছাত্রী কলেজগুলিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন কি না। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরেও অধিকাংশ কলেজেই পাস ও অনার্সের আসন খালি। ব্যতিক্রম নয় জেলাও। কলেজগুলির শূন্য আসন পূরণে ফের পোর্টাল চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর।
এর ফলে আরেকবার কলেজে পড়ুয়ারা স্নাতক স্তরে কলেজে ভর্তি হওয়ার এবং পছন্দমাফিক বিষয়ে অনার্স পড়ার সুযোগ পেতে চলেছেন। জেলার বিভিন্ন কলেজ সূত্রে খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ মেনে ৯ তারিখ থেকেই কলেজ গুলিতে সেই পোর্টাল খুলছে। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হবে ২৬ নভেম্বর। কিন্ত পোর্টাল চালু হলেও কত শতাংশ আসন পূরণ হবে সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে কলেজ শিক্ষকদের মধ্যে। আরও একটি প্রশ্ন হল ডিসেম্বরে প্রথম সিমেস্টারের পরীক্ষা এত দেরিতে ভর্তি হলে পড়ুয়ারা প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় পাবেন কি না তা নিয়েও।
জেলার কলেজ শিক্ষক ও অধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যাচ্ছে, জেলার বিভিন্ন কলেজেও বহু পাস ও অনার্সের (বিশেষত সংরক্ষিত) আসন খালি। আরও একটি সমস্যা হল একই ছাত্র একাধিক কলেজে ভর্তি হয়ে রয়েছেন। অথচ যে কলেজে পড়বেন না সেই কলেজকে কিছু জানাননি। তাই ক্লাস শুরুর আগে বোঝাই যাচ্ছে না প্রকৃত কতজন পড়ুয়া আদতে একটি কলেজে ভর্তি হয়েছেন। বরং নতুন করে ভর্তি হওয়ার চেয়ে দূরের কলেজ ছেড়ে কাছের কালেজে স্থানান্তরিত হয়ে আসার সুযোগ তৈরি হবে।
শিক্ষকদের একাংশের অনুমান, কোভিডের জন্য অনেক পড়ুয়াকেই পড়া ছেড়ে জীবিকার সন্ধানে হয়তো ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয়েছে। আসন শূন্য থাকার সেটাও একটা কারণ বলে তাঁদের অনুমান। অধ্যক্ষদের একাংশের মত, যে সব পড়ুয়া স্নাতক স্তরে ভর্তি হতে চান এতদিনে তাঁদের সকলেই প্রায় কলেজে ভর্তি হয়েছেন। হতে পারে হাতে গোনা কিছু পড়ুয়া হয়তো সেই সুযোগ নিতে পারে নি। তাদের উপকার হতে পারে। কিন্তু সংখ্যাটা বিরাট হবে না বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
ইলামবাজারের কবি জয়দেব কলেজের অধ্যক্ষ মহাদেব দেওয়াশী বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় যে নির্দেশিকা দিয়েছে সেটা মেনে পোর্টাল চালু করব। কারণ, আমার কলেজে এখনও বাংলা ও ইতিহাসে ৫০ শতাংশ ও বাকি বিষয়ে ১০ শতাংশ আসন খালি। আসন ফাঁকা রয়েছে।’’ হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজে, সিউড়ির বীরভূম মহাবিদ্যালয়-সহ অন্য কলেজেও আসন ফাঁকা রয়েছ।
হেতমপুর কৃ্ষ্ণচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সব বিষয়েই কিছু আসন খালি রয়েছে। বিশেষ করে তফসিলি জাতি-জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যা কম। প্রায় একই কথা বলছেন বীরভূম মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘‘আমার কলেজে অনার্সের পাস কোর্সে বহু আসন পূরণ হয়নি। ফের চালু পোর্টাল চালুর সিদ্ধান্ত হলে কিছু পড়ুয়া সুযোগ পাবে হয়তো। তবে সেই সংখ্যাটা কত হবে বুঝতে পারছি না।’’
তবে ভিন্ন ছবি রামপুরহাট কলেজে। টিআইসি বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘কলেজে ওয়েটিংয়ে রয়েছেন ৭০০ জন পড়ুয়া। তাই নতুন করে পোর্টাল চালু করব কি না সেটা আলোচনা সাপেক্ষে ঠিক করব। বরং সংরক্ষিত আসনগুলিকে জেলাশাসকের কাছে আবেদন করে ডি-রিজার্ভ করার চেষ্টা করছি।’’