Herbal Abir Making

ভেষজ আবিরে সুরক্ষা ও স্বনির্ভরতা, দিশা দেখাচ্ছে পড়ুয়ারা

শিক্ষকেরা জানান, প্রতি বছরই দোলের পরে ছাত্র-ছাত্রীরা যখন স্কুলে ফিরে আসে তখন তাদের হাতে, মুখে, গায়ে রঙের ছোপ লেগে থাকে।

সৌরভ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৫ ১০:৪৯
Share:
ভেষজ আবির তৈরী করছে কড়িধ্যা যদুরায় হাইস্কুলের পড়ুয়ারা।

ভেষজ আবির তৈরী করছে কড়িধ্যা যদুরায় হাইস্কুলের পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।

স্কুলের ভেষজ উদ্ভিদের বাগান থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণ নিয়ে স্কুলের পরীক্ষাগারের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল প্রাঙ্গণেই তৈরি করছে ভেষজ আবির। আসন্ন দোল উৎসবের আগে স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের হাতেকলমে আবির তৈরির পাঠ দিচ্ছেন স্কুলেরই শিক্ষকেরা। একদিকে সচেতনতা, অন্য দিকে ভবিষ্যতে স্বনির্ভরতার পাঠ দিতে এমনই পদক্ষেপ করেছে সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশন।

শিক্ষকেরা জানান, প্রতি বছরই দোলের পরে ছাত্র-ছাত্রীরা যখন স্কুলে ফিরে আসে তখন তাদের হাতে, মুখে, গায়ে রঙের ছোপ লেগে থাকে। অনেকের শরীরে নানা রকমের র‌্যাশও হয়। তখনই তাঁদের মাথায় এই ভেষজ আবির তৈরির ভাবনা আসে। সেই মতো এ বছর দোলের প্রায় এক মাস আগে থেকে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি।

স্কুলের গণিতের শিক্ষক মহেন্দ্রনাথ পাল বলেন, “প্রথমে স্কুলের ভেষজ উদ্ভিদের বাগানে থাকা লিপস্টিক গাছ (বিজ্ঞানসম্মত নাম বিক্সা ওরেলিনা), যার চলতি নাম দইগোটা, সেই গাছের ফলের বীজ সংগ্রহ করা হয়। তারপর সেই বীজ গুঁড়ো করে নিয়ে সেগুলি রোদে শুকোতে দেওয়া হয়। লাল রঙের সেই গুঁড়োর সঙ্গে পরিমাণ মতো সোপ স্টোন মিশিয়ে সেটিকে ফের শুকোতে দেওয়া হয়।’’

তিিন জানান, এই গুঁড়োর মধ্যে অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকায়, সেটিকে স্বাভাবিক করার জন্য এর সঙ্গে যোগ করা সঙ্গে ক্ষারীয় পদার্থ। শেষে এর সঙ্গে ভেষজ সুগন্ধি যোগ করে তৈরি করা হচ্ছে লাল আবির। একই ভাবে ভেষজ হলুদকে ব্যবহার করে হলুদ আবির ও নিম পাতা ব্যবহার করে সবুজ আবিরও হচ্ছে। ত্বকের যত্নের কথা ভেবে এর সঙ্গে যোগ করা হচ্ছে অ্যালোভেরাও। তাঁর কথায়, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকারা তত্ত্বাবধান করলেও হাতেকলমে কাজ করছে পড়ুয়ারাই।”

স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ত্রয়ী বাগদি, ঈশা কাহার, পৌলমী অধিকারী জানায়, এর আগে ভেষজ আবিরের নাম শুনলেও কখনও এ ভাবে নিজেরা তৈরি করার সুযোগ পায়নি তারা। আগামিদিনে নিজেদের বাড়িতেও এই পদ্ধতিতে আবির তৈরি করতে পারবে তারা। আবিরের গুণগত মান যেমন একদিকে বৃদ্ধি পাবে, তেমনই আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর হয়েও একটি নতুন দিক খুলে দেবে তাদের জন্য।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক যামিনীকান্ত সাহা বলেন, “দোলের আগেই আগামী ১২ মার্চ আমরা স্কুলে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করছি। সে দিন ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তৈরি আবির দিয়েই একে অন্যকে রাঙিয়ে দেবে সকলে। একটি বড় পর্দায় এই আবির তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটির রেকর্ডিং চালানো হবে। স্কুলজুড়ে ব্যানার ও ফ্লেক্স লাগিয়ে ভেষজ পদ্ধতিতে আবির তৈরির উপায় এবং এই আবির ব্যবহারের সুফল প্রচার করা হবে। আগামিদিনে ভেষজ আবির তৈরি নিয়ে নিয়মিত বড় আকারে কর্মশালা আয়োজনেরও পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন