মেয়েদের স্কুল গড়তে জমি দানের সিদ্ধান্ত

স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে কলেজ। এলাকার একাধিক জনহিতকর প্রতিষ্ঠান গড়তে ইতিমধ্যেই বহু জমিদান দান করেছেন ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। এ বার এলাকায় একটি বালিকা বিদ্যালয় গড়ার জন্যও বাড়িয়ে দিলেন সহযোগিতার হাত। প্রস্তাবিত বালিকা বিদ্যালয় কমিটির হাতে তুলে দিলেন প্রায় দেড় বিঘে জমিদানের রেজোলিউশন। শীঘ্রই ওই জমি প্রস্তাবিত বালিকা বিদ্যালয় কমিটির নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়ারও দায়িত্ব নিলেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৫ ০১:০৮
Share:

স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে কলেজ। এলাকার একাধিক জনহিতকর প্রতিষ্ঠান গড়তে ইতিমধ্যেই বহু জমিদান দান করেছেন ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। এ বার এলাকায় একটি বালিকা বিদ্যালয় গড়ার জন্যও বাড়িয়ে দিলেন সহযোগিতার হাত। প্রস্তাবিত বালিকা বিদ্যালয় কমিটির হাতে তুলে দিলেন প্রায় দেড় বিঘে জমিদানের রেজোলিউশন। শীঘ্রই ওই জমি প্রস্তাবিত বালিকা বিদ্যালয় কমিটির নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়ারও দায়িত্ব নিলেন তাঁরা।

Advertisement

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯১৩ সালে মধ্য ইংরাজি স্কুল থেকে ১৯৭৬ সালে লোকপাড়া হাইস্কুল গড়ে ওঠে। ওই স্কুল গড়ার সময়েই এলাকার শিক্ষানুরাগী মানুষ জন বহু জমি দান করেন। পরবর্তী কালে বেশ কিছু জমি কেনাও হয়। খেলার মাঠ এবং বিশাল চত্ত্বর-সহ স্কুলবাড়ি নির্মাণের পরেও উদ্বৃত্ত থেকে যায় বহু জমি। সেই জমিই বিভিন্ন সময় ঢেকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, লোকপাড়া গ্রামীণ গ্রন্থাগার-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়তে দান করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এমনকী, ২০১০ সালে সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত লোকপাড়া কলেজ গড়তেও দু’দফায় প্রায় সাড়ে ৫ একর জমিদান করেছিলেন তাঁরা।

সম্প্রতি প্রস্তাবিত বালিকা বিদ্যালয় কমিটির বৈঠকে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রায় দেড় বিঘা জমিদানের রেজোলিউশান তুলে দেন কর্তৃপক্ষের হাতে। শুধু তা-ই নয়, ওই জমি রেজিস্ট্রির জন্য প্রয়োজনীয় টাকাও যৌথ ভাবে ধার হিসাবে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বৈঠকে হাজির থাকা স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ দে এবং লোকপাড়া কলেজের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রোশনি দে। তাঁরা বলেন, ‘‘এলাকায় এই বালিকা বিদ্যালয় আমাদের স্কুল এবং কলেজের সহযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করবে। তাই বালিকা বিদ্যালয় গড়ার জন্য আমরা সব রকম সহযোগিতায় প্রস্তুত।’’

Advertisement

ওই বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে হাজির ছিলেন ময়ূরেশ্বর ২ বিডিও সৈয়দ মাসুদুর রহমান, জয়েন্ট বিডিও আরিকুল ইসলাম, জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জটিল মণ্ডল, স্থানীয় ঢেকা পঞ্চায়েতের প্রধান মিঠু গড়াই, লোকপাড়া হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য প্রমুখ। জয়ন্তবাবু জানান, স্কুলের পরিচালন সমিতির বৈঠকে ওই জমিদানের প্রস্তাব সর্ব সম্মতি ক্রমে গৃহীত হয়েছে। অন্য দিকে, বিডিও বলেছেন, ‘‘একের পর এক জনহিতকর প্রতিষ্ঠান গড়তে জমিদানের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদের পাশাপাশি শ্রদ্ধা জানাই সেই সব শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষদের, যাঁরা এক সময় স্কুল গড়তে ওই সব জমি দান করেছিলেন।’’

লোকপাড়ায় মেয়েদের একটি স্কুলের চাহিদা দীর্ঘ দিনের। কারণ, কাছাকাছি ১৫ কিলোমিরটারের মধ্যে কোনও বালিকা বিদ্যালয় নেই। অথচ এলাকার স্কুলগুলিতে ছাত্র বিশেষত ছাত্রীদের চাপ বাড়ছে। বর্তমানে লোকপাড়া হাইস্কুলে ১,৭৫০ জন পড়ুয়ার মধ্যে ৯০০ জনই ছাত্রী। তার উপর প্রতি বছরই স্থানীয় প্রাইমারি স্কুল, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র এবং জুনিয়র হাইস্কুলগুলি থেকে পড়ুয়ারা ভিড় জমাচ্ছে। স্থানের অভাবে তাদের সকলকে ভর্তি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে।

এ দিকে, প্রস্তাবিত বালিকা বিদ্যালয় কমিটির সম্পাদক সৌগত চৌধুরী এবং সহ-সভাপতি নারায়ণপ্রসাদ চন্দ্র জানান, স্কুলের অনুমোদনের জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আর্কষণ করা হয়েছে। তিনি তা খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ করার আশ্বাসও দিয়েছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আশিসবাবু বলছেন, ‘‘সত্যিই ওই এলাকায় শিক্ষা, বিশেষত নারী শিক্ষার প্রসারের জন্য একটি বালিকা বিদ্যালয় জরুরি। এ বিষয়ে নিয়ম মাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বালিকা বিদ্যালয় গড়তে জমি দেওয়ার জন্য লোকপাড়া হাইস্কুল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement