দেবী এলেন কপ্টারে

দিন কয়েক আগের কথা। মাইকে ভেসে আসছিল কথাগুলো— ‘আমি কেষ্ট বলছি। দিদি হেলিকপ্টারে আসছেন না। আসছেন গাড়িতে। আপানারা সব এখানে এসে বসুন। আমি কেষ্ট বলছি...।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৩৬
Share:

দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো। — দয়াল সেনগুপ্ত।

দিন কয়েক আগের কথা। মাইকে ভেসে আসছিল কথাগুলো— ‘আমি কেষ্ট বলছি। দিদি হেলিকপ্টারে আসছেন না। আসছেন গাড়িতে। আপানারা সব এখানে এসে বসুন। আমি কেষ্ট বলছি...।’ জয়দেব ঘেঁষা টিকরবেতার সরকারি মঞ্চ থেকে তৃণমূল জেলা সভাপতির এই ঘোষণা হতাশ করেছিল অপেক্ষমান ভিড়কে। সেই আক্ষেপ ভুলতে সরস্বতী পুজোকেই বেছে নিল টিকরবেতার একটি ক্লাব। সেখানে এ বার দেবী এসেছেন হেলিকপ্টারে চড়ে। অর্থাৎ, কপ্টারের মধ্যে দেবী!

Advertisement

গত ১০ জানুয়ারি জয়দেবে বাউল ও লোক উৎসবের উদ্বোধনে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বোলপুর থেকে সেখানে হেলিকপ্টারে আসার কথা ছিল তাঁর। মঞ্চের কিছুটা দূরে মাঠের মধ্যে ব্যারিকেড দিয়ে হেলিপ্যাড বানানোও হয়েছিল। মেঘলা আকাশ, ঝিরঝির বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিদির (মুখ্যমন্ত্রী) কপ্টারে উড়ে আসা প্রত্যক্ষ করতে চেয়েছিলেন জনতা। অনুব্রতর ওই ঘোষণায় মন ভেঙেছিল তাঁদের সকলেরই।

টিকরবেতা গ্রামটি জয়দেবের ঠিক আগের গ্রাম। জনসংখ্যা প্রায় হাজার চারেক। এত বড় গ্রামে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর কদর কম থাকার কথা নয়। বাড়ির বাইরেই মণ্ডপ করে গোটা কুড়ি পুজো হয়েছে। তবে, সবচেয়ে আকর্ষণীয় টিকরবেতা গৌরাঙ্গ ক্লাবের কপ্টারে প্রতিমা। ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক তথা রূপকার মণিশঙ্কর দাস বলছেন, ‘‘বিরূপ আবহাওয়ায় সব ভেস্তে গিয়েছিল সে দিন। অনেক কচিকাঁচা মা-বাবার সঙ্গে গিয়েও কপ্টার দেখতে পায়নি। সেই আক্ষেপ দূর করতে, বিশেষ করে ছোটদের আনন্দ দিতেই এ বার আমাদের সরস্বতী পুজোয় এমন ভাবনা।’’ ৫০ বছরের বেশি পুরনো ক্লাবের বর্ষিয়ান সভাপতি কালীদাস মণ্ডল, সদস্য সুভাষ কর্মকাররাও জানান, সে দিন হেলিকপ্টারে না আসুন মুখ্যমন্ত্রী, ফেব্রুয়ারির ঝকঝকে আবহাওয়ায় কপ্টারে দেবী সরস্বতী আসবেন, তাতে বাধা কোথায়? সকলে খুব আনন্দ পাচ্ছে। সব সময় কচিকাঁচারা ভিড় করে রেখেছে।

Advertisement

বছর তিনেকের মেয়ে তৃপ্তিকে নিয়ে সে দিন মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারে আসা দেখেতে গিয়েছিলেন বধূ টুম্পা দে। ক্লাবের এমন ভাবনার তারিফ করে বলছেন, ‘‘খুব ভাল করেছেন ওঁরা। মেয়েটা তো ওখানেই পড়ে রয়েছে।’’ যাদের কথা ভেবে করা, কী বলছে তারা? দ্বিতীয় শ্রেণির রিমঝিম সিংহ, চতুর্থ শ্রেণির অমৃত দাস বা বছর চারেকের শুভ্র কবিরাজরা বলছে, ‘‘দারুণ হয়েছে। একেবারে সত্যিকারের দেখতে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement