শুভেচ্ছা: পুরুলিয়া শহরের হাসপাতাল মোড়ে। ছবি: সুজিত মাহাতো
হোর্ডিং-এ আছেন রাম-হনুমান। আছেন জেলার মন্ত্রীও।
কাল, শনিবার রামনবমী। পুরুলিয়ার বাসিন্দারা বলছেন, এ বার ব্যাপারটা অন্য রকমের হচ্ছে বটে!
গত বছর রামনবমীর ঠিক পরেই দুই জেলায় সভা করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারকে কাঠগড়ায় তুলে বলেছিলেন, ‘‘রামনবমী কি তোমাদের? বাসন্তী পুজো আমরা করিনি? অন্নপূর্ণা পুজো করিনি?’’ এ বছর সরকারিভাবে কোনও কর্মসূচি ঘোষিত না হলেও, জেলায় জেলায় তৃণমূলও রামনবমী পালনের কমিটি তৈরি করেছে। ঠিক হয়েছে, যেখানে সঙ্ঘ পরিবার রামনবমী পালন করার প্রস্তুতি নেবে, সেখানে আরও বড় করে রাম-মিছিল করা হবে। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, ‘‘বাংলার রাম আমাদের দখলেই থাকবেন।’’
ফলে, জেলার রাস্তায় রাস্তায় হোর্ডিং। অটোর গায়ে স্টিকার। কোথাও মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, কোথাও জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো, কোথাও জেলার পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কোথাও খোদ দলনেত্রীর ছবি। মানুষজনকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে রামনবমী আর বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা। শুধু পুরুলিয়া শহর নয়, জেলার নানা প্রান্তে ঢুঁ মারলে চোখে পড়বে এমন অনেক হোর্ডিং।
তৃণমূলের জেলা সম্পাদক নবেন্দু মাহালি জানান, বুধবার দলের জেলা কমিটির বৈঠকে সর্বস্তরের কর্মীদের রামনবমী পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বলছেন, ‘‘উৎসব তো সবাই পালন করতে পারেন। এ বার আমরাও করব।’’
গত বার পুরুলিয়া শহরে রামনবমীর শোভাযাত্রা করেছিল বজরং দল। মিছিলে ভিড় হয়েছিল ভালই। এ বার পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে সেই ভিড় নিজেদের দিকে টানতে তৎপর হয়েছে শাসকদল। রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি জানিয়েছেন, ওই এলাকায় কর্মীরা সক্রিয় ভাবেই রামনবমী পালনে থাকবেন। আদ্রাতেও জোরদার ভাবে উৎসব হবে বলে জানিয়েছেন কাশীপুরের বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া। তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘মানুষের পাশে থাকার বার্তা আমাদের সব উৎসবেই থাকে। রামনবমীও তার ব্যতিক্রম নয়।’’
তবে রামনবমী উদযাপনে তৃণমূলের এই প্রস্তুতিকে কটাক্ষ করছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘দেরিতে হলেও বোধদয় হয়েছে ওঁদের। এটা ভাল ব্যাপার। তবে রাম ক্ষমা করলেও মানুষ ওঁদের ক্ষমা করবেন না।’’