সিউড়ি ২ ব্লকে তৃণমূলের প্রতিনিধি সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন সাংসদ শতাব্দী রায়। — নিজস্ব চিত্র।
উপলক্ষ ছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীদের সংবর্ধনা ও তাঁদের ভবিষ্যৎ কর্তব্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করা। কিন্তু রবিবার সিউড়িতে তৃণমূলের সেই অনুষ্ঠানই কার্যত পরিণত হল আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্রচার মঞ্চে৷ নির্বাচন ঘোষণা, প্রার্থী ঘোষণার ঢের আগেই বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র থেকে চতুর্থ বারের জন্য সাংসদ হিসাবে শতাব্দী রায়কেই বিপুল ভোটে জেতানোর আর্জি জানালেন সাঁইথিয়ার বিধায়ক নীলাবতী সাহা। যদিও শতাব্দীর দাবি, ‘‘প্রার্থী পদের ক্ষেত্রে দলই সিদ্ধান্ত নেবে, বিধায়কের মন্তব্য সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত।’’
সিউড়ি ২ ব্লকের পুরন্দরপুরে মাঠে এ দিন তৃণমূলের ব্লক প্রতিনিধি সম্মেলন আয়োজিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ শতাব্দী রায়, সাইথিয়ার বিধায়ক নীলাবতী সাহা, সিউড়ি ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নুরুল ইসলাম সহ ব্লক তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতৃত্ব। সেখানে জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন শতাব্দী। বগুটুইয়ের উদাহরণকে সামনে রেখে বিজেপিকেও কটাক্ষ করেন তিনি। নাম না করে বগটুইয়ের নিহত পরিবারের সদস্য তথা পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী মিহিলাল শেখ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বগটুইয়ে নানানরকম গল্প তৈরি হয়েছিল। যিনি বারবার সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে তৃণমূলকে গালাগালি করেছেন, নিজের দুঃখের কথা জানিয়েছেন, সমবেদনা চেয়েছেন তিনি বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তিনি নির্বাচনে মাত্র ১৭টি ভোট পেয়েছেন। নিজের পরিবারের কয়েকজন সদস্য ছাড়া একজন মানুষও তাঁর পাশে দাঁড়াননি।”
ওই মঞ্চ থেকেই আসন্ন লোকসভা ভোটে শতাব্দীকে জেতানোর ডাক দেন বিধায়ক নীলাবতি। পরে তিনি বলেন, “আমি নিজের কথা বলিনি। এলাকার সমস্ত মানুষ, দলীয় কর্মী সকলেই দিদির (শতাব্দী রায়) কাজে অত্যন্ত খুশি। আমি মানুষের সেই চাহিদার কথাই বলেছি।” এ দিন প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে জেলা পরিষদের জয়ী প্রার্থী তথা সিউড়ি ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি নুরুল ইসলামকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেন বিধায়ক। যদিও নুরুল জানান, পদাধিকারী নির্বাচন করবে দলের রাজ্য নেতৃত্ব, এখানে বাকিদের কিছুই বলার নেই।
এ দিন বিজয়ী প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেই বিজয়ী মহিলা প্রার্থীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান শতাব্দী। তাঁর দাবি, বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় মহিলারা প্রার্থী হচ্ছেন ঠিকই কিন্তু বকলমে সমস্ত কাজ তাঁদের স্বামীরাই করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যে স্বামীরা তাঁদের স্ত্রীদের রাজনীতির ময়দানে এনেছেন, তাঁদের উচিত নিজেদের স্ত্রীদের রাজনীতির পাঠ দেওয়া। তবেই মহিলাদের রাজনীতির ময়দানে সামনে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য সফল হবে।’’