ফাইল চিত্র।
আরপিএফ জওয়ানদের তৎপরতায় ট্রেন থেকে উদ্ধার হল ছয় নাবালক-নাবালিকা। পরে, তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তাদের সকলেরই বাড়ি পুরুলিয়ায়। বৃহস্পতিবার টাটানগর-আসানসোল ট্রেনের একটি কামরা থেকে ওদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে আরপিএফ। জেলা চাইল্ড লাইনের দাবি, ছেলেমেয়েগুলি জানিয়েছে, তাদের বাবা-মা মাঝেমধ্যেই ঝগড়া করেন। সে কারণেই তারা ঘর ছেড়ে আনাড়ায় ঠাকুমার কাছে যাবে বলে ঠিক করেছিল।
বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া স্টেশন থেকে টাটানগর-আসানসোল ট্রেনে চড়ে তারা। বাগালিয়া ও আনাড়া স্টেশনের মাঝে টহলরত কয়েক জন আরপিএফ জওয়ান একটি কামরায় এক কিশোরী ও তার সঙ্গে থাকা পাঁচ শিশুকে দেখতে পান। কোথায় যাবে জানতে চাওয়া হলে নিরুত্তর থাকে তারা। সন্দেহ হওয়ায় তাদের আরপিএফ-এর আনাড়া পোস্টে আনা হয়। বিস্কুট এবং জল দেওয়া হয়। আরপিএফ-এর ইনস্পেক্টর অজয় গরাঁই তাদের সঙ্গে গল্প শুরু করেন। কিছু ক্ষণ পরে, তারা জানায়, আনাড়ায় ঠাকুমার বাড়ি যাচ্ছিল।
আরপিএফের তরফে ঘটনার কথা জেনে ঘটনাস্থলে পৌঁছন চাইল্ড লাইনের কর্মী হীরালাল বাউরি। ওই নাবালক-নাবালিকাদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানান, উদ্ধার হওয়া ওই ছ’জনের মধ্যে এক জনের বয়স কম-বেশি ১৫। সঙ্গে ছিল তার পাঁচ ভাই-বোন। তাদের বয়স চার থেকে এগারোর মধ্যে। বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করে ওদের পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ওই নাবালক-নাবালিকাদের বাবা বলেন, ‘‘আমার পাঁচ ছেলে-মেয়ে এবং এক ভাইঝি কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিল। আনাড়ায় আমার মা থাকেন। সেখানেই যাচ্ছিল ওরা।’’ নাতি-নাতনিদের ট্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে শুনে এসেছিলেন তাদের ঠাকুমা। তিনি বলেন, ‘‘ওরা মাঝেমধ্যে আমার কাছে যায়। কিছু দিন কাটিয়ে চলে আসে। তবে, কাউকে কিছু না বলে ট্রেনে উঠে পড়বে, তা ভাবিনি!’’ উদ্ধার হওয়া কিশোরী বলে, ‘‘বাবা-মা ঝগড়া করে। আমাদের খারাপ লাগে। তাই ঠাকুমার কাছে থাকব বলে বেরিয়ে পড়েছিলাম।’’ তার বাবার কথায়, ‘‘অনেক সংসারেই এ সব হয়। সে জন্য ওরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে, তা ভাবিনি।’’
জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্য অশোক মাহাতো বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েগুলিকে বাবার সঙ্গে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। সোমবার তাদের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে হাজির করাতে বলা হয়েছে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।