প্রতীকী ছবি।
১৯৯৪ সালের অগস্ট। বিহার হোমগার্ডের চারটি ‘থ্রি নট থ্রি’ রাইফেল লুট হয়েছিল মহম্মদবাজার থানা এলাকায়। ২৮ বছর পরে লুট হওয়া সেই রাইফেলগুলির ফেরত পাওয়া সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার সিউড়ি আদালতে এসে এমন আশ্বাসই পেয়েছেন ঝাড়খণ্ড হোমগার্ডের এক সাব-ইনস্পেক্টর সচিত দাস ও কনস্টেবল মনোজ কুমার। তবে মঙ্গলবারই নয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লুঠ হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ফেরত পেতে এর আগেও সিউড়িতে এসে জেলা পুলিশের কর্তা ও সিউড়ি আদালতে যোগাযোগ করেছেন ঝাড়খণ্ড (তৎকালীন বিহার) হোমগার্ডের আধিকারিকেরা।
ঝাড়খণ্ড হোমগার্ডের সাব-ইনস্পেক্টর সচিত দাস বলেন, ‘‘এত দিন আগের ঘটনা। রাজ্য বদলে গিয়েছে। বহু আধিকারিক বদলি হয়েছেন, অবসর নিয়েছেন। তার পরেও আগ্নেয়াস্ত্রগুলি পাওয়া যাবে শুনে ভাল লাগছে। আসলে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তাদের চাপ রয়েছে।’’
ঠিক কী ঘটেছিল?
ঝাড়খণ্ডের হোমগার্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, তৎকালীন বিহারের দুমকা থেকে পানাগড়গামী যাত্রীবাহী বাসগুলিকে মহম্মদবাজার থানা এলাকার চারিচা জঙ্গল পর্যন্ত ‘স্কট’ করার দায়িত্বে থাকত বিহার হোমগার্ডের উপরে। একই ভাবে দায়িত্ব থাকত বিহারগামী বাসগুলিকে নিয়ে যাওয়ার। তেমন দায়িত্ব পালনের সময়ে ১৯৯৪ সালের অগস্টে এক দিন চরিচায় হোমগার্ডদের উপরে হামলা হয়। যারা হামলা চালিয়েছিল, তাদের অনেকে বাসের যাত্রী সেজে উঠে ছিল। ঘটনার আকস্মিকতা হকচকিয়ে যান হোমগার্ডেরা। তাঁদের হাত থেকে চারটি থ্রি নট থ্রি রাইফেল কেড়ে জঙ্গলে গা ঢাকা দেয় দুষ্কৃতীরা। পরে সেগুলি উদ্ধার করে পুলিশ। আদালতে মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে বহু বছর আগে। সেই আগ্নেয়াস্ত্রগুলিই এ বার ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ঘটনার পরে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে লুট হওয়া রাইফেলগুলি উদ্ধার করেছিল মহম্মদবাজার থানা। মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে অনেক বছর আগে। এত দিন পরে সেই অস্ত্র ফেরত পেতে ঝক্কি পোহাতে তো হবেই। সহমত আইনজীবীরাও।
জেলার পাবলিক প্রসিকিউটরের মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মালখানায় অস্ত্রগুলির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সেটা পেলেই বলা যাবে কোনও কোর্টে কবে মামলাটির নিষ্পত্তি হয়েছিল। সেটা পেলেই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি ফেরতের জন্য বিচারকের কাছে আবেদন জানাব।’’
কিন্তু প্রশ্ন হল, রাইফেলগুলি নিতে এত দেরি হল কেন?
ঝাড়খণ্ডের দুমকা থেকে আসা হোমগার্ডের দুই প্রতিনিধি বলেন, ‘‘২০০৬ সাল পর্যন্ত বীরভূমের পুলিশ সুপারের সঙ্গে চিঠির আদান প্রাদান হয়েছে। সেই সূত্রে জানা গিয়েছে, তখনও মামলা চলছিল। হতে পারে তার পরে আর সে ভাবে ফলোআপ করা হয়নি। কারণ, অধিকারিকেরা বদলে গিয়েছেন। যাঁদের সঙ্গে ঘটনা ঘটেছিল, তাঁরাও অবসর নিয়েছেন। দফতরের কর্তারা আগ্নেয়াস্ত্রগুলি ফেরত চাইতেই তৎপরতা বেড়েছে। ফলে, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তাদের চাপ রয়েছে। চুরি যাওয়া রাইফেলগুলি উদ্ধার হবে জেনে স্বস্তি লাগছে।’’