জটমুক্তির পথ খুঁজছে সিউড়ি

বাড়িঘর, দোকানপাট আপনার, রাস্তা তবে কার? এই সরল প্রশ্নের উত্তর খোঁজা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়েছে জেলা সদর সিউড়ির পথ চলতি মানুষের কাছে। অফিস-স্কুলের সময় হোক বা সন্ধ্যার বাজার, যানজট থেকে মুক্তি নেই কারও। হকার সমস্যা থেকে দখলদারি, সঙ্কীর্ণ রাস্তার ঘেরাটোপ— সিউড়ির যান চলাচল বারবার থমকে পড়ছে। দুর্ভোগে বিরক্তি বাড়ছে সাধারণের। কিন্তু এ সব থেকে মুক্তি মিলবে কবে?

Advertisement

তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:০৫
Share:

এই জট থেকে মুক্তি কবে? উত্তর খুঁজছে জেলা সদর। —নিজস্ব চিত্র।

বাড়িঘর, দোকানপাট আপনার, রাস্তা তবে কার?

Advertisement

এই সরল প্রশ্নের উত্তর খোঁজা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়েছে জেলা সদর সিউড়ির পথ চলতি মানুষের কাছে। অফিস-স্কুলের সময় হোক বা সন্ধ্যার বাজার, যানজট থেকে মুক্তি নেই কারও। হকার সমস্যা থেকে দখলদারি, সঙ্কীর্ণ রাস্তার ঘেরাটোপ— সিউড়ির যান চলাচল বারবার থমকে পড়ছে। দুর্ভোগে বিরক্তি বাড়ছে সাধারণের। কিন্তু এ সব থেকে মুক্তি মিলবে কবে? সদুত্তর মিলছে না পুলিশ-প্রশাসনের থেকে।

ঘটনা হল, সিউড়িবাসীর অভিজ্ঞতা বলছে— বড় ডাকঘর মোড়, ইন্দিরাচকের পুরনো ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, বীরভূম জেলা স্কুল, টিনবাজারের চৌমাথায় হরবখত জ্যাম লেগেই থাকে। সিউড়ি-সাইথিয়া রাস্তায় বাজারের মধ্যে দু’দিকে বড় গাড়ি এসে গেলেই গালে হাত দিয়ে বসে থাকা ছাড়া কোনও উপায় থাকে না। চৌমাথার মোড় দিয়ে মালিপাড়া কিংবা উল্টো দিকে বাসস্ট্যান্ড যেতে গেলেও আবার একই সমস্যা! সেখানে পুরনো সিউড়ির সঙ্কীর্ণ একফালি রাস্তা। দোকানের সামনে রাখা সাইকেল, মোটরবাইকের সারি, এখানে সেখানে দাঁড়িয়ে টোটো। রাস্তার উপরেই বসছে মাছ বাজার। খোলা বঁটি থেকে কোনও রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে বাসিন্দাদের পথ চলা। এ দিকে, স্বদেশি বাজারের পিছনের রাস্তা জুড়ে সকাল থেকে ১২-১টা অবধি চার চাকার গাড়ির অলিখিত নো-এন্ট্রি বসায় তরকারির বাজার। বিপদ হলে দমকল বা অ্যাম্বুল্যান্স কীভাবে ঢুকবে, সে চিন্তাটুকুও যেন কারও-রই নেই। সকাল-সন্ধ্যা একই ছবি বীরভূম জেলা স্কুল, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে আসার রাস্তা। এক দিকে, রাস্তার ধারে ফুটপাথটাই বেমালুম চুরি হয়ে গিয়েছে। উল্টো দিকে, বাড়ছে মোটরবাইক, টোটো, গাড়ির সংখ্যা। ফুটপাথ জুড়ে ছোট, বড় নানা ব্যবসা। পার্কিংয়ের বালা-ই নেই। নিয়ম ভাঙার গর্বে বুক ফুলিয়ে চলেছেন একদল।

Advertisement

এত অন্ধকারের মধ্যেও কিঞ্চিৎ আশার আলোও দেখা দিয়েছে। প্রশাসন সিউড়ির হাটজন বাজার থেকে প্রশাসনিক ভবন পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে দখলদার সরিয়ে পুরনো চওড়া রাস্তা ফিরিয়ে দিয়েছে। সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড, বেণীমাধব মোড়, প্রশাসনিক ভবন মোড়, এসপি মোড়ের মতো ব্যস্ত জায়গায় নতুন করে বসতে চলেছে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থা। সিউড়ির তিলপাড়া আর হাটজন বাজারে পার্কিংয়ের জায়গা চিহ্নিত করার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে ট্রাফিক পুলিশের সূত্রের খবর। এ সবে যদিও দুর্ভাবনা কাটছে না শহরবাসীর। টিনবাজারের ব্যাবসায়ী তুষারকান্তি রায়, কাঞ্চন দাসরা বলছেন, ‘‘চৌমাথার মোড়ে তো নজরদারির জন্য সিসিটিভি বসেছে। তার পরেও কি সেখানে যানজট নিয়ন্ত্রণে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া গিয়েছে? বিশেষ বিশেষ দিনে তো বাজারের ভিড়ে দিশেহারা হয়ে যান এলাকার মানুষ। আসলে যানজট সামাল দেবার জন্য সবার আগে প্রশাসনিক সদিচ্ছা এবং তৎপরতার প্রয়োজন।’’ সিউড়ি-সাঁইথিয়ার বাইপাস রাস্তার ব্যাপারে গুরুত্ব দিলে শহরের যানজট সমস্যা কিছুটা মিটবে বলে তাঁদের আশা।

সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছেন, “শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে দখলদার মুক্ত করে রাস্তার ওই অংশগুলি চওড়া করা হবে। শহরের যান চলাচল স্বাভাবিক করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement