খেলো ইন্ডিয়া এবং রাজ্য স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পদক জয়ীরা। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার সাইতে অনুষ্ঠিত সদ্য সমাপ্ত ‘খেলো ইন্ডিয়া খেলোর’ রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় পুরুলিয়া দুটি সোনা, একটি রূপো ও একটি ব্রোঞ্জ পদক পেল। অনূর্ধ্ব ১৭ বিভাগে বলরামপুরের দুই পড়ুয়া সোম টুডু ১০০ মিটারে ও করুণাময় মাহাতো ৪০০ মিটারে সোনা জিতেছে। একই বিভাগে টামনার সঙ্গীতা মাহাতো ১০০ মিটারে রূপো এবং অনূর্ধ্ব ১৪ বিভাগে পুরুলিয়ার বিভীষণ পরামাণিক ব্রোঞ্জ জিতেছে।
ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে উত্তর ২৪ পরগনার বাণীপুরে অনুষ্ঠিত ৬২ তম রাজ্য বিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব ১৭ বিভাগে সাগেন হেমব্রম লং জাম্পে রূপো ও ট্রিপল জাম্পে ব্রোঞ্জ ও চন্দনা কর্মকার লংজাম্প ও ট্রিপল জাম্পে ব্রোঞ্জ পেয়েছে। অনূর্ধ্ব ১২ বিভাগে পঙ্কজ সিংহ শটপাটে রূপো ও লং জাম্পে ব্রোঞ্জ জিতছে। দুটি প্রতিযোগিতার জেলার ফল দেখে খুশি অনেকেই।
‘খেলো ইন্ডিয়া খেলো’ প্রতিযোগিতায় পুরুলিয়া দলের ম্যানেজার সৌরভ সেন বলেন, ‘‘যাঁরা সাফল্য এনেছে, তাঁদের প্রত্যেকেই গ্রামের সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা। সঙ্গীতা আগেরবারও সাফল্য পেয়েছিল।’’ অনুশীলন ঠিক মতো করতে পারলে এই পদকজয়ীরা ভবিষ্যতে আরও ভাল কিছু করতে পারবে বলে তিনি আশাবাদী। মানবাজার ২ ব্লকের বোরোর বাসিন্দা পঙ্কজকে হাত ধরে তুলে আনা বোরো উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক তারকনাথ দত্ত বলেন, ‘‘স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যেমন ভাবে অন্য পড়ুয়ারা যোগ দেয়, পঙ্কজও সে ভাবেই এসেছিল। প্রথমবার শটপাট ছুড়ে তাক লাগিয়ে দেয়।’’
প্রশিক্ষকেরা বারে বারে গ্রামের প্রতিযোগীদের প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেছেন। তারকনাথবাবুর কথায়, ‘‘অনেকেই রয়েছে, যাদের ভালমন্দ তো দূর, পুষ্টিকর খাবারটুকুও জোটে না।’’ জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক নূরউদ্দিন হালদার জানান, গতবার রাজ্যে ভাল ফল করে সাগেন ও চন্দনা ন্যাশন্যালও মিট করে এসেছে। সে তথ্য জানিয়ে তিনি নিজেই যোগ করছেন, ‘‘কিন্তু এঁদের ঠিক ভাবে অ্যাথলেটিক্স কোচের তত্ত্বাবধানে অনুশীল প্রয়োজন। সোমা যেমন দুর্গাপুরে একটি আকাডেমিতে রয়েছে। সেই সুযোগ পুরুলিয়ায় এঁদের নেই।’’
এই প্রশ্নে উঠে আসছে অন্য একটি প্রসঙ্গ। রাজ্য সরকার মানভূম ক্রীড়া সংস্থার মাঠে জেলার উদীয়মান অ্যাথলিটরা যাতে প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে থেকে অনুশীলন করতে পারে, সেই লক্ষ্যে একটি স্পোর্টস হস্টেল তৈরি করেছে। তার নির্মাণ কাজও শেষ। সে প্রসঙ্গ তুলে অনেকেরই প্রশ্ন, ‘‘কবে দরজা খুলবে এই স্পোর্টস হস্টেলের?’’