শেষদিনে শেষ বেলাতেও সেই অর্থে ভিড় নেই বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে বইমেলায়।সোমবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
বিক্রি ভাল হবে, আশা নিয়ে এ বছর বোলপুরে জেলা বইমেলায় স্টল দিয়েছিলেন বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা ও পুস্তক বিক্রেতারা। কিন্তু, বইমেলায় সে ভাবে লোক হয়নি। ব্যবসায়ীদের দাবি, বইমেলা নিয়ে প্রচারও সে ভাবে করা হয়নি। সোমবার, শেষ দিনেও মেলা জমেনি। প্রায় ফাঁকাই ছিল মাঠ। বিক্রি ভাল না হওয়ায় হতাশ বিক্রেতারা।
বোলপুর ডাক বাংলো মাঠে গত ২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল বীরভূম জেলা বইমেলা। মোট ৮৭টি স্টল দেওয়া হয়। ভাল বেচাকেনার আশায় এসেছিল বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা। ছিলেন ছোট-মাঝারি পুস্তক বিক্রেতারাও। তাঁদের দাবি, তাঁরা ভেবেছিলেন, বোলপুর-শান্তিনিকেতনে কবি, লেখক, সাহিত্যকর্মী থেকে বহু শিক্ষিত-গুণীজনের বাস। এখানে বই বিক্রি বেশি হবে। অভিযোগ, প্রশাসনিক স্তরে ঠিক মতো প্রচার না করার পাশাপাশি মেলার ব্যবস্থাপনায় ‘খামতি’, সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলিকে ঠিক ভাবে আমন্ত্রণ না জানানো, বইমেলার বাইরে সাংস্কৃতিক মঞ্চ নানা পরিকল্পনার অভাবে প্রথম দিন থেকেই তেমন ভিড় হয়নি।
তবে, একই সময়ে শহরে অন্য মেলা হওয়ার কারণেও বইমেলায় লোক কম হয়েছে বলে অনেকের মত। সোমবার বইমেলার শেষ দিনেও ভিড় হয়নি। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য বছর বোলপুরে বইমেলায় যেখানে কোটি টাকার উপরে বই বিক্রি হয়ে থাকে, সেখানে শেষ হিসেব অনুযায়ী এ বার ৮৫ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। নবীন প্রজন্মের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না বলেও জানান একাধিক বই বিক্রেতা। তাঁদের মতে, এর অন্যতম প্রধান কারণ ছাত্রছাত্রীদের মোবাইলে ফোনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা ও আসক্তি।
বইমেলায় স্টল দেওয়া শৈবাল ভৌমিক, রঞ্জিত মল্লিক, শুভম দাসেরা বলেন, “বইমেলার সঙ্গে সম্পর্ক অন্য রকম। তাই প্রতিবার আসি। তবে এ বার অনেক আশা নিয়ে এসেছিলাম। বিক্রি একেবারেই আশানুরূপ হয়নি। ফলে এক প্রকার হতাশা নিয়েই ফিরতে হচ্ছে।’’ বইমেলা কমিটির সহকারী সভাপতি তথা মহকুমাশাসক (বোলপুর ) অয়ন নাথ বলেন, “ডিজিটাইজ়েশনের কারণে বই পড়ার প্রবণতা কিছুটা কমেছেই। ইন্টারনেটে আসক্তিও একটা বড় কারণ। এর ফলে বইমেলায় লোকসমাগমের অভাব।’’