বিষ্ণুপুর হাসপাতালে আহত গোপালচন্দ্র দাস। নিজস্ব চিত্র।
এলাকার মহিলাদের ‘উত্ত্যক্ত’ করার প্রতিবাদ করতে গিয়ে তরোয়ালের ‘কোপে’ আহত হলেন এক ক্লাব সম্পাদক। শুক্রবার সকালে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর শহরের ঘটনা। হামলায় মাথা ফাটে ও হাতে আঘাত পান গোপালচন্দ্র দাস। তাঁকে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
ক্লাবের সভাপতি প্রশান্ত পালের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অর্জুন দাস, করন দাস ও তাঁদের বাবা অশোক দাসকে গ্রেফতার করে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) গণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার তাঁদের আদালতে তোলা হবে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় নজর বাড়ানো হয়েছে।’’
শুক্রবার সকালে বিষ্ণুপুর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের খড়বাংলা তাঁতিপাড়ার ঘটনা। কী হয়েছিল? ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি খড়বাংলা সবুজ সঙ্ঘ ক্লাবের সম্পাদক গোপালবাবুর অভিযোগ, এলাকায় অর্জুন দাসের একটি গ্রিলের দোকান আছে। সেখানে দিনরাত বাইরের ছেলেদের ভিড় থাকে। রাস্তা দিয়ে এলাকার মেয়েরা গেলেই দোকান থেকে তাঁদের উত্ত্যক্ত করা হয়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘শুক্রবার বাজার সেরে বাড়ি ফেরার পরে পাড়ার মেয়েরা এসে তাঁদের ওই দোকান থেকে ছেলেরা উত্ত্যক্ত করছে বলে আমাকে জানান। আমি অর্জুনকে ডেকে বোঝাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে না বুঝে উল্টে আমাকে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দেয়। পরে তার দাদা করন তরোয়াল নিয়ে ছুটে এসে আমার গলা লক্ষ করে চালাতে যায়। আটকাতে গেলে হাতে তরোয়ালের আঘাত লাগে। তার পরে আমার মাথায় কোপ মারে। মাথা ফেটে যায়।’’ বাসিন্দারা জানান, ওই ঘটনা দেখার পরে সেখানে এলাকার লোকজন ছুটে যান। অভিযুক্তেরা পালায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অনেক রাত পর্যন্ত সাউন্ড বক্স বাজিয়ে ওই দোকানে জড়ো হওয়া ছেলেরা হুল্লোড় করেন। তাতে এলাকার ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার অসুবিধা হয় বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা অভিজিৎ দাস। তিনি বলেন, “প্রতিবাদ না করেই ওরা পেয়ে বসেছিল। তবে প্রতিবাদ করেই লাভ কী হল? এখন পুলিশের আশ্বাসই ভরসা।’’ এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় অর্জুন দাসের দোকান বন্ধ। তাঁদের বাড়িতেও কেউ নেই। তাই তাঁদের তরফে প্রতিক্রিয়া মেলেনি।