বার্তা: রক্ত দিয়ে লেখা হচ্ছে প্ল্যাকার্ড। রবিবার রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র
এনআরসি নিয়ে ইতিমধ্যেই গোটা দেশ উত্তাল। দিল্লি থেকে কলকাতা সর্বত্রই মিছিল, ধর্না, আন্দোলনে সরব বিরোধীরা। বীরভূমের বিভিন্ন এলাকায় এনআরসি বিরোধিতায় লুট, ভাঙচুর, মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বেসরকারি সংস্থার ‘ইন্টারনেট সাথী’ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত মহিলারা আক্রান্ত হয়েছেন সম্প্রতি। এ বার প্রতিবাদ হল রক্ত দিয়ে এনআরসি বিরোধী প্ল্যাকার্ড লিখে।
রবিবার রামপুরহাট শহর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ট্রেড ইউনিয়নের চতুর্থ সম্মেলন ছিল। রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে সম্মেলন শুরুর আগে রামপুরহাট পাঁচ মাথা মোড়ে সমবেত হন সকলে। সেখানে সংগঠনের চার সদস্যের শরীর থেকে সিরিঞ্জ দিয়ে ১০মিলিলিটার করে রক্ত বের করা হয়। তারপর নিজেরাই সেই রক্তে আঙুল চুবিয়ে ‘নো এনআরসি’ বলে লেখেন।
এই প্ল্যাকার্ডগুলি রামপুরহাট শহরের প্রাণকেন্দ্র পাঁচমাথা মোড়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। রক্তে লেখা প্ল্যাকার্ড এনআরসি বিরোধী আন্দোলনে অন্য মাত্রা আনল বলে মনে করছে আইএনটিটিইউসি পরিচালিত এই সংগঠনের সদস্যরা। রামপুরহাটবাসীর কাছেও এই রবিবারের সকালটা একটু অন্যরকম হল পাঁচমাথার মোড়ে রক্তে লেখা প্ল্যাকার্ড দেখে। আগামী এক মাস এই প্ল্যাকার্ডগুলি পথের ধারে ঝোলানো থাকবে বলে জানান সংগঠনের সদস্যরা। এ দিন একটি মিছিলও বের হয় এনআরসির প্রতিবাদে। পাঁচমাথা মোড় থেকে রামপুরহাট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় পর্যন্ত মিছিল করে সম্মেলনে উপস্থিত হন সদস্যরা। সম্মেলনে হাজির ছিলেন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। রেলের জায়গায় দখলদারদের পুর্নবাসন না দিয়ে উচ্ছেদ করতে দেওয়া হবে না বলে মন্ত্রী ফুটপাত ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ফুটপাতে ব্যবসা করেন শতাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। পাঁচ বছর আগে শহরের ডাকবাঙলা মোড়, পাঁচমাথা মোড়-সহ বিভিন্ন প্রান্তের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নিয়ে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত রামপুরহাট শহর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ট্রেড ইউনিয়ন গঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি আব্দুর রেকিব এ দিন নিজের রক্ত দিয়ে প্ল্যাকার্ড লিখেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের মোট সদস্য তিনশো’রও বেশি। ভোটার কার্ড আছে। এ দেশের নাগরিক বলেই আমরা ভোট দিয়েছি। এর পরেও আমাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে বলে যাঁরা ফরমান জারি করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা রক্ত দিয়ে আন্দোলন শুরু করলাম। এই আন্দোলন জারি থাকবে।’’
আরেক সদস্য সোমনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ধর্ম নিরপেক্ষতা ভারতীয় সংবিধানের অহংকার এবং ভারতীয় গণতন্ত্রের চালিকাশক্তি। সেক্ষত্রে ধর্মের নামে যারা বিভাজনের রাজনীতি করছে তাদের বিরদ্ধে সরব হতেই রক্ত দিয়েছি।’’