অধিকার: মাড়গ্রামে মহিলাদের নমাজ। নিজস্ব চিত্র
হাতেগোনা কয়েক জন থেকে ধাপে ধাপে একশো পেরোনো। তাতেই লেগে গেল এগারো বছর!
মাড়গ্রামের গোদামপাড়ার মসজিদে মহিলাদের নমাজ পড়ায় বৃদ্ধির এই হারে অবশ্য খুশি বেগম সঙ্ঘমিতা চৌধুরী। সালটা ছিল ২০০৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন শ্বশুরবাড়িতে ইদের নমাজে নিজে যোগ দিয়ে এলাকার মহিলাদের বাড়ির বাইরে পৃথক লাইনে নমাজ পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন পেশায় চিকিৎসক সঙ্ঘমিতা। স্বামী প্রাক্তন বিচারপতি, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী নুরে আলম চৌধুরী। সঙ্ঘমিতা নিজেও ২০১৪ সালে বর্ধমান থেকে তৃণমূলের সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন।
সঙ্ঘমিত্রা এখনও মাড়গ্রামের গোদামপাড়ার মসজিদে প্রতিবেশী মহিলাদের সঙ্গে নমাজ পড়েন। তাঁর পর্যবেক্ষণ, সংখ্যায় পুরুষদের থেকে কম হলেও বাড়ির বাইরে গিয়ে নমাজ পড়ার সংখ্যাটা দিনের পর দিন বাড়ছে। ২০০৬ সালেও মসজিদ চত্বরে মহিলাদের জন্য নমাজের আলাদা জায়গা হয়েছিল। এখনও সেই জায়গায় নমাজে যোগ দেন মহিলারা। তবে, তখন সংখ্যাটা ছিল হাতেগোনা। এখন সংখ্যাটা একশো ছাড়িয়েছে।
সোমবার সকালে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়, মহিলাদের মাড়গ্রামের গোদামপাড়ার বাড়িতে দেখা মিলল সঙ্ঘমিতার। তাঁর কথায়, ‘‘ইদ হচ্ছে খুশি ও মিলনের উৎসব। চিরকাল মহিলারা উৎসবের দিন বাড়ির মধ্যে আর প্রতিবেশীদের জন্য ঘরে আবদ্ধ থাকবেন, সেটা সে দিনও মেনে নিতে পারিনি। আজও পারি না।” তিনি জানান, প্রথমে পাড়ার এবং নিজের আত্মীয়-স্বজনদের মসজিদে গিয়ে নমাজ পড়তে উৎসাহিত করেন। তখন অল্পস্বল্প সাড়া পেয়েছিলেন। পরে আস্তে আস্তে সংখ্যাটা বাড়তে থাকে। তাঁর কথায়, ‘‘এ বার সংখ্যাটা একশো ছাড়ানোয় ভাল লাগছে। আমি চাই খুশির উৎসবে সকলে একসঙ্গে আনন্দ উপভোগ করুক।’’ নুরে আলম চৌধুরী জানালেন, মহিলারা নমাজ পড়তে বাড়ির বাইরে আসছেন এটা ভাল লক্ষণ। তবে সচেতনতা আরও বেশি বাড়ানো দরকার।
তবে অন্য ছবিও রয়েছে। ২০০৫ সালে মুরারই নতুন বাজারে মহিলারা পৃথক ভাবে নমাজ পড়েছিলেন। নানা বাধায় সেই নমাজ বছর ঘুরতেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেখানে ব্যতিক্রম মাড়গ্রামের গোদামপাড়া।