টাকা মিলবে তো, সাঁইথিয়ায় এক আমানতকারী। ছবি: অনির্বাণ সেন।
বার্ধক্যভাতা-সহ আমানতকারীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল এক পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে। সাঁইথিয়ার আমোদপুর এলাকার কচুইঘাটা ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসের ঘটনা। মৌখিক অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার জেলার পোস্টাল সুপারিনটেনডেন্ট পরিমল মিত্র এলাকায় যান। সকলের সঙ্গে কথা বলে তিনি অভিযুক্ত পোস্টমাস্টার অরবিন্দ মালের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ প্রমাণিত হলে পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে।’’
স্থানীয়দের দাবি, অরবিন্দবাবু বুধবার থেকে আচমকা পোস্টঅফিসে না আসায় সন্দেহ জোরালো হয়। তিনি দীর্ঘ দিন ধরেই এই অফিসে কর্মরত। তাঁর গ্রামের বাড়ি লাভপুরের পঞ্চগঙ্গা গ্রামে। তবে বোলপুরেই থাকতেন। সেখান থেকেই যাতায়াত করতেন। অভিযোগের ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, তাঁর ব্যবহার নিয়ে স্থানীয়দের কোনও অভিযোগ নেই। অনেকেই বলছেন, ‘‘উনি গ্রাহকদের সঙ্গে সময় নিয়ে কথা বলতেন। সমস্যা বুঝে সমাধানের দিকনির্দেশও করতেন।’’ কিন্তু, মাস দেড়েক ধরে তাঁর আচরণে অস্বাভাবিকতা নজরে আসে বলে স্থানীয়দের দাবি। তবে তিনি অন্যের টাকা আত্মসাৎ করতে পারেন, এমনটা বিশ্বাস হচ্ছে না অনেকেরই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই পোস্ট অফিসটি সাঁইথিয়া থানা এলাকার কচুইঘাটায় অবস্থিত হলেও লাভপুরেরও বেশ কিছু গ্রাম তার আওতাধীন। অরবিন্দবাবু না আসায় বুধবার পোস্টঅফিসের কাজ হয়নি। গ্রাহকদের অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার অফিস খোলে। সেই সময় পাসবই চেক করাতে গিয়ে কয়েক জন দেখতে পান গচ্ছিত টাকা উধাও! ধনডঙার পেশায় কৃষক মনসুর আলি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার জানতে পারি আমার আড়াই লক্ষ টাকা নেই।’’ নাটুরবোনা গ্রামের টেম্পু মুর্মু আবার দাবি করেছেন তাঁর ২.১০ লক্ষ টাকার খোঁজ মিলছে না। লাভপুর এলাকার বিক্রমপুরের পঞ্চায়েত সদস্য অজয় মণ্ডলের আবার দাবি, ‘‘গত দু’মাস ধরে এলাকার ৬০-৬৫ জনের কেউ বার্ধক্য ভাতার টাকা পাননি। আমরা এ দিন সুপারিনটেনডেন্টকে বার্ধক্যভাতা প্রাপকদের তালিকা দিয়েছি। অবিলম্বে টাকার ব্যবস্থা করার দাবিও জানিয়েছি।’’
সব মিলিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে অরবিন্দবাবুর বিরুদ্ধে। তাঁর সহকর্মী আনন্দ মির্ধা ও মদন মণ্ডল এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পরিমলবাবু জানান, বৃহস্পতিবার অফিস খোলানো হয়। আমানতকারীদের আমোদপুর পোস্ট অফিসে পাশবই ভেরিফাই করাতে অনুরোধ করেছেন পরিমলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ওই পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে।’’