স্কুলভোটে বোমা, আটক তিন

স্কুলভোটের ফল নিয়ে দু’পক্ষের বিবাদ। আর সেই বিবাদই চেহারা নিল বোমাবাজিতে। রবিবার গভীর রাতে নলহাটি থানার মোস্তাফাডাঙা এএমইউ সিনিয়র মাদ্রাসার ওই ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে আটক করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নলহাটি শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০১:৫৬
Share:

স্কুলভোটের ফল নিয়ে দু’পক্ষের বিবাদ। আর সেই বিবাদই চেহারা নিল বোমাবাজিতে।

Advertisement

রবিবার গভীর রাতে নলহাটি থানার মোস্তাফাডাঙা এএমইউ সিনিয়র মাদ্রাসার ওই ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে আটক করেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দু’টি মোটরবাইকও আটক করেছে। স্কুলের অভিভাবক প্রতিনিধির নির্বাচনে সামিল তৃণমূল ও বামফ্রন্ট সমর্থিত প্রার্থী, দু’পক্ষই থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে বোমাবাজি এবং গণ্ডগোলের অভিযোগ দায়ের করেছে। এসডিপিও (রামপুরহাট) জোবি থমাস কে বলেন, ‘‘গণ্ডগোলের খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ এলাকায় পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। জরুরি কাজে কলকাতা আসার জন্য, তার পরে ঠিক কী হয়েছে জানা নেই।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এমনিতেই মোস্তফাডাঙার ওই স্কুলের পরিচালন সমিতি বামপন্থী প্রগতিশীল মোর্চার দখলে ছিল। তা ছাড়াও এলাকায় নলহাটি ২ পঞ্চায়েত সমিতি, স্থানীয় ভদ্রপুর ২ পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদের আসনটি বামেদের দখলে আছে। ওই একই এলাকাতেই গত লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায় বামফ্রন্ট প্রার্থী প্রয়াত কামরে এলাহির চেয়ে পিছিয়ে ছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল এ বার ওই স্কুলকে দখল করার জন্য মরিয়া লড়াই চালানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল। অভিভাবক প্রতিনিধির ভোটের কিছু দিন আগেই আবার এলাকার কয়েক জন বাম পঞ্চায়েত সদস্যকে তৃণমূল নিজেদের দিকে নিয়ে আসে। এই পরিস্থিতিতে মোস্তাফাডাঙার ওই স্কুলের ভোটকে কেন্দ্র করে রবিবার দিনভর এলাকায় উত্তেজনা ছিল।

Advertisement

স্কুল সূত্রের খবর, স্কুলের ছ’টি আসনে মোট ৭৯৬ জন ভোটারের মধ্যে ৫০৫ জন ভোট দিয়েছিলেন। ছ’টির মধ্যে একটি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। সেখানেই বামেদের পক্ষে ফল হয়েছে ৪-২। কিন্তু, বামেদের দাবি, ওই ফল আসনে ৫-১। কেন? সিপিএমের লোহাপুর জোনাল সম্পাদক আব্দুস সালামের বক্তব্য, একটি আসনই মহিলা সংরক্ষিত ছিল। সেখানে তৃণমূলের এক জন জিতেছেন। কিন্তু, অন্য আসনটির ক্ষেত্রেও তৃণমূলের এক মহিলা প্রার্থী বেশি ভোট পেলেও তা ধরা যাবে না বলে তাঁর দাবি। তৃণমূলের নলহাটি ২ ব্লক সভাপতি বিভাস অধিকারীর যদিও যুক্তি, ‘‘একটিই মাত্র আসন সংরক্ষিত। অন্য আসনগুলি সাধারণ। সেখানে যে সব থেকে বেশি ভোট পাবেন, তিনিই তো জিতবেন!’’ ওই তর্ক পাল্টা তর্ক থেকেই গণ্ডগোল ও বোমাবাজির সূত্রপাত বলে অভিযোগ।

এ দিন বিভাসবাবু দাবি করেন, সিপিএম ভোটারদের টাকাপয়সা দিয়ে প্রলোভিত করেছে। জয়ের আনন্দে ওরা এলাকায় বোমাবাজিও করেছে। তাই তিনি পুর্ননির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। আব্দুস সালামের পাল্টা দাবি, ‘‘মানুষের রায়ে ভোটে হারতেই তৃণমূল তা মানতে না পেরে এলাকায় বোমাবাজি করে। ফল ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরেও ওরা জোর করে জয়ী প্রার্থীদের সার্টিফিকেট দেওয়া বন্ধ করে দেয়।’’ তাঁর অভিযোগ, পুলিশ এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার নাম করে গ্রাম থেকে বেছে বেছে তাঁর এবং দলের জেলা পরিষদ সদস্য তথা অধ্যক্ষ খাইরুল হাসানের মোটরবাইক দু’টি অন্যায় ভাবে আটক করেছে।

এ দিকে, সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসার জাকির হোসেনের সঙ্গে এ দিন চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মহাদেব সোরেনের বলেন, ‘‘মহিলা সংরক্ষিত আসনে যে মহিলা সব থেকে বেশি ভোট পেয়েছেন তিনি-ই জিতবেন। অন্য আসনগুলির ক্ষেত্রে যিনি সব থেকে বেশি ভোট পেয়েছেন, পুরুষই হোন বা মহিলা, জেতা তো তাঁরই কথা। এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

কর্মবিরতি। বকেয়া মেটানো-সহ ১৭ দফা দাবিতে সোমবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করলেন গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণ ও তার রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিযুক্ত পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বণ্টন নিগমের নথিভুক্ত ঠিকাদারেরা। ওই উপলক্ষে এ দিন রামপুরহাট ভাঁড়শালা মোড় সংলগ্ন জাতীয় সড়কের ধারে নিগমের রামপুরহাট বিভাগীয় অফিসের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভেও সামিল হন সংস্থার ৩০ জন নথিভুক্ত ঠিকাদার। তাঁদের বক্তব্য, দীর্ঘ দিন থেকে দাবিগুলি সংস্থার কাছে জানানো হয়েছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত কোনও কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement