জাতীয় সড়কে গরু নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। রামপুরহাট। নিজস্ব চিত্র
পথে যেতে যেতে অনেকে থমকে দাঁড়ালেন। কেউ মুখ টিপে হাসলেন। রামপুরহাটে জাতীয় সড়ক ধরে চলেছে গরুর পাল। তাদের নিয়ে চলেছেন পুলিশকর্মীরা। তাঁদের হাতে লাঠি।
গরু পাচার মামলায় গত কয়েক মাস ধরে সরগরম বীরভূমে এ এক অন্য ছবি। ওই মামলাতেই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তার পর থেকেই পাচার রুখতে পুলিশি তৎপরতা চোখে পড়ছে। পরের পর গরু আটক করছে পুলিশ। শনিবার রাতে বীরভূম লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের শিকারিপাড়া থানার সীমানায় রামপুরহাটের মাস্তান মোড়ে নজরদারির সময় দু’টি ট্রাক-সহ তিনটি গাড়ি আটক করে পুলিশ। ৪৮টি গরু উদ্ধার করা হয়। সোমবার ফের উদ্ধার হয় ৫০টি গরু। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন ঝাড়খণ্ডের সারসডাঙার গরুর হাট থেকে ৫০টি গরু কিনে হাঁটিয়ে মুর্শিদাবাদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রামপুরহাট বাইপাস রাস্তায় পুলিশ গরু আটক করে বৈধ কাগজ দেখতে চায়। বৈধ কাগজ না থাকায় যে চার জন রাস্তা দিয়ে গরু হাঁটিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
এর পরে প্রায় দু’কিলোমিটার পথ গরুগুলিকে হাঁটিয়ে নিয়ে গিয়ে মনসুবা মোড়ের কাছে একটি জায়গায় রাখার বন্দোবস্ত করেন পুলিশকর্মীরা। জাতীয় সড়ক দিয়ে গরু নিয়ে যাওয়ার ফলে কিছুটা হলেও যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ পোশাক পরে গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এই দৃশ্য পথচলতি অনেকেই ক্যামেরাবন্দি করতে থাকেন।
বস্তুত গত কয়েক দিনে রামপুরহাট থানা কয়েকশো গরু আটক করেছে। এই তৎপরতা আগে দেখা যায়নি বলে বিরোধীদের কটাক্ষ। বিজেপি-র বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘তৃণমূলের জেলা সভাপতি গ্রেফতার হওয়ার পরেই জেলা পুলিশ গরু নিয়ে তৎপর। গরু পাচার ঠেকাতে পুলিশ যে উদ্যোগী, তা বোঝানোর চেষ্টা চলছে।’’ অন্য দিকে, যে চার জনকে এ দিন গ্রেফতার করা হয়, তাঁদের অন্যতম জাহাঙ্গির শেখের দাবি, ‘‘হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং গরুর হাটের বৈধ কাগজ থাকা সত্বেও পুলিশ ধরপাকড় চালাচ্ছে। এই ভাবে চলতে থাকলে প্রশাসন কেন গরুর হাট চালানোর ছাড়পত্র দিচ্ছে? হাট বন্ধ করলেই গরু কেনাবেচা হবে না।’’
জেলার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, বৈধ কাগজ না-থাকায় চার জনকে ধরা হয়েছে।