ফাইল চিত্র।
হেলমেট না পরে মোটরবাইকে, স্কুটার চালালে শাস্তির মুখে পড়বেন পুলিশকর্মীরা— এমনই লিখিত নির্দেশ জারি করলেন বীরভূমের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল।
মঙ্গলবার জারি করা এক নির্দেশে তিনি জানিয়েছেন— পথচলার পাঠ শেখানোর আগে পুলিশকর্মীদের উচিত ট্রাফিক কানুন মেনে চলা। এর পর থেকে কর্তব্যরত অবস্থায় বা ব্যক্তিগত কাজে মোটরবাইক বা স্কুটার চালানোর সময় পুলিশকর্মী, গ্রামীণ পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের বাধ্যতামূলক ভাবে হেলমেট পড়তে হবে। না হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
সামলে চালাও, প্রাণ বাঁচাও— পথ দুর্ঘটনায় রাশ টানতে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে রাজ্য জুড়ে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচির প্রচারে বার্তা এমনই। সে কথা প্রচার ও নজরদারির দায়িত্বে মূলত রয়েছে পুলিশই। কিন্তু বারবারই অভিযোগ উঠেছে, নিরাপদে গাড়ি চালানোর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির এই প্রয়াস সফল করার দায়িত্ব যাঁদের কাঁধে, সেই পুলিশকর্মীদের এক অংশই নিয়ম ভাঙেন রাস্তায়। হেলমেট ছাড়াই চালান মোটরবাইক।
পুলিশকর্মীদের সেই ভুল রুখতে তৎপর হলেন জেলার পুলিশ সুপার।
পথে দুর্ঘটনা রুখতে সরকারি কর্মসূচি সফল করতে নানাবিধ নিয়মের অন্যতম মোটরবাইক বা স্কুটার আরোহীদের হেলমেট পরা। নিয়ম না মানলে জরিমানা। পেট্রোল পাম্পে হেলমেট ছাড়া তেল দিতে নিষেধ করা হয়েছে। প্রশাসনিক তথ্য বলছে, তার পরেই হেলমেটের ব্যবহার বেড়েছে। নজরদারির জন্য মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো বা বেপরোয়া গাড়ি চালানোর প্রবণতাও কমেছে। কিন্তু তার পরেও ফাঁক থাকছে। অধিকাংশ পথ দুর্ঘটনা এখনও পথচলার নিয়ম না মানার জন্যই ঘটছে।
কিন্তু যাঁদের কাঁধে তা দেখার দায়িত্ব, তাঁদের অনেকেই নিয়ম মানতেন না— প্রায়শই এমন ছবি দেখেছেন জেলাবাসী। প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশকর্মীদের জীবনের কী দাম নেই? নাকি তাঁদের নিয়ম মানার বালাই নেই? উল্লেখ্য শুধু জেলার মানুষ নন, পুলিশকর্মীদের পথচলার নিয়ম না মানার উদাহরণের কথা নির্দেশেও উল্লেখ করেছেন পুলিশ সুপার।
জেলার বিভিন্ন থানার কর্মরত পুলিশ আধিকারিকদের বক্তব্য— উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এমন নির্দেশ আগেও এসেছে। কিন্তু সেটা এমন লিখিত আকারে ছিল না। সে দিক থেকে দেখলে জেলা পুলিশ সুপারের এমন নির্দেশে নিয়মভঙ্গকারীরা আরও সতর্ক হতে পারেন।
জেলা পুলিশ সুপার বলছেন, ‘‘আমার চোখে অনেক বার এ সব ধরা পড়েছে। হেলমেট ছাড়া দেখলে বকেছি। মৌখিক নির্দেশে কাজ হচ্ছে না বলেই লিখিত দিয়েছি। পুলিশকর্মীরাই যদি নিয়ম না মানেন, তা হলে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি সফল হবে কী ভাবে!’’