—প্রতীকী ছবি।
নদিয়ার শান্তিপুরে সাত জনের মৃত্যু উস্কে দিয়েছে বছর পাঁচেক আগে তারাপীঠের স্মৃতি। সংবাদমাধ্যমের দৌলতে শান্তিপুর পর পর মৃত্যুর কথা জানাজানি হতে বুধবারই নলহাটির শীতলগ্রাম, সিমলান্দি এলাকায় বেআইনি মদ বিক্রি বন্ধ করতে অভিযান চালায় আবগারি দফতর।
পুলিশ সূত্রের খবর, তারাপীঠ শ্মশানে শবদাহ করতে এসে ২০১৩ সালের ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর আট জনের মৃত্যু হয়েছিল। তদন্তে জানা যায় বিষ-মদ খেয়েই ওই মৃত্যু। মৃতদের অধিকাংশই শ্মশান লাগোয়া দোকান থেকে মদ কিনে খান। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দোকানের মদ বিক্রির লাইসেন্সও ছিল না। বাড়ি ফিরে অনেকে অসুস্থ হতে শুরু করেন। পরে একে একে মৃত্যু হয় আট জনের। পরে দোকানের মালিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে অবশ্য তিনি জামিনে মুক্ত। গ্রামবাসীর দাবি, মৃতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন বলেও তাঁদের জানা নেই।
গত পাঁচ বছরে অবৈধ মদ বিক্রি রুখতে আবগারি দফতর, পুলিশ-প্রশাসন জেলার রাজনগর থেকে রাজগ্রাম— বহু অভিযান চালিয়েছে। তাতেও অবৈধ মদ বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করা গিয়েছে, সে কথা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না আবগারি কর্তারাও। আবগারি দফতরের জেলা সুপার বাসুদেব সরকারের দাবি, ‘‘গত দেড় বছরে খয়রাশোল থানা এলাকা থেকে মুরারই পর্যন্ত অবৈধ মদ বিক্রি বন্ধ করার জন্য অসংখ্য অভিযান হয়েছে। প্রচুর পরিমাণে অবৈধ মদ বিক্রির সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে অবৈধ মদের বিক্রি যে একেবারে বন্ধ হয়েছে সে কথা বলতে পারব না। কিন্তু, আগের চেয়ে অনেক কমেছে।” অবৈধ মদ বিক্রি নির্মূল করতে আগামী দিনে নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করে অভিযান হবে বলেও দফতর সূত্রের খবর।
জেলা প্রশাসনও মানে, অবৈধ মদ বিক্রি বন্ধ করতে বড়সড় ভূমিকা রয়েছে প্রমীলা বাহিনীর। রামপুরহাট মহকুমা এলাকার নলহাটি থানার শীতলগ্রাম, সিমলান্দি, মুরারই থানার পলসা, রামপুরহাট থানার সোঁয়াসা, মাড়গ্রাম থানার চাঁদপাড়া এই সমস্ত গ্রামে প্রমীলা বাহিনী, বিশেষ করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যরা অভিযান চালিয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে বেআইনি মদের ভাটি। অভিযানে থাকা অনেকের অভিযোগ, তাঁরা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বহু এলাকায় বেআইনি মদের কারবার বন্ধ করে দিলেও পরে ফের তা শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অভিযোগের আঙুল পুলিশ, প্রশাসন পঞ্চায়েতের প্রধান এবং সদস্যদের দিকে। সে সব অবশ্য মানতে চায়নি পুলিশ, প্রশাসন।