চিহ্ন: ধীবরপাড়ার এখান থেকেই শুরু হয়েছিল পাইপ পাতা। নিজস্ব চিত্র
জলের পাইপলাইন সম্প্রসারণের কাজ করতে গিয়ে এলাকাবাসীর বাধার মুখে পড়লেন কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার। শনিবার পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ধীবরপাড়ার ঘটনা। ঘটনার জেরে শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই কাজ বন্ধ করে দিতে হয় বলে অভিযোগ। বাধাদানকারী বাসিন্দাদের সঙ্গে এলাকার বিজেপি কাউন্সিলরও ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আপাতত কাজ বন্ধ করে দফতরের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন, জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার শেখ আব্বাস।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুরগুমা জলাধার থেকে নলবাহিত যে পানীয় জল ঝালদা পুর-এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরবরাহ করা হয়, তা থেকে বেশ কয়েকটা এলাকা বঞ্চিত। বিশেষ করে পুর-শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের একটা বড় অংশ বা ২ নম্বর ওয়ার্ডের হরিজনপাড়ার মতো এলাকায় এখনও নলবাহিত জল পৌঁছয় না। কারণ, ওই এলাকাগুলিতে পাইপলাইনই নেই। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরে পাইপলাইন সম্প্রসারণের জন্য আবেদন জানানোর পরে প্রকল্প হাতে নেয় দফতর। শহরে আরও ১,৬০০ ফুট দীর্ঘ পাইপলাইন পাতার জন্য বরাদ্দ হয় সাড়ে চার লক্ষের বেশি কিছু টাকাও।
সেই প্রকল্পমতো এ দিন সকালে কাজ শুরু হয়। তবে কাজ শুরুর কিছু পরেই এলাকার কিছু বাসিন্দা এসে কাজে বাধা দেন বলে স্থানীয় ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। শেষমেষ সামান্য কিছুটা রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে পিছিয়ে আসতে হয় ওই ঠিকাদারকে। অভিযোগ, বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রকল্পের কাজে বাধা দিতে দেখা যায় ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিজেপির তপন কান্দুকে।
ঠিকাদার শেখ আব্বাস বলেন, ‘‘বাধার মুখে পড়ে আপাতত কাজটা বন্ধ রেখেছি। দফতরে সব জানিয়েছি। যেমন নির্দেশ আসবে সেই মোতাবেক কাজ করব।’’
কিন্তু পাইপলাইন পাতার কাজে বাধা কেন? কাউন্সিলর তপন কান্দু বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে ওই রাস্তা ঢালাই করা হয়েছে। ওই ঠিকাদার জেসিবি মেশিনে রাস্তা কাটছিলেন। রাস্তার ক্ষতি হতে পারে বলে আপত্তি তুলেছি।’’ রাস্তা কাটার নির্দিষ্ট যন্ত্র এনে রাস্তা কাটতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ দিকে কাজ বন্ধ হওয়ায় ক্ষুব্ধ নলবাহিত জলের সুবিধার বাইরে থাকা বাসিন্দাদের একাংশ। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাগতিপাড়ার বাসিন্দা রানি সূত্রধর, বুধু রজক, বাবু সিংহেরা বলেন, ‘‘আমাদের ওয়ার্ডে কোনও টাইমকল নেই। পানীয় জল নিতে অন্য ওয়ার্ডে গিয়ে লাইন দিতে হয়। যদিও বা কাজটা শুরু হয়েছিল তাতেও তো বাধা পড়ল।’’
পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার জানান, কোনও পক্ষ থেকেই তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘পাইপলাইন পাততে গেলে রাস্তা তো কাটতেই হবে। যেটুকু রাস্তা খারাপ হবে, তা কাজের পরে ঠিক করে দেওয়া হবে।’’