বাঁকুড়ার জয়পুরে রাজ্য সড়কের উপরে বাঁশ হাতে বহু জায়গায় এমন জমায়েত ছিল। সোমবার। ছবি: শুভ্র মিত্র
ব্লক অফিসের কয়েক কিলোমিটার আগেই বাঁশ হাতে রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াল এক দল যুবক। তৃণমূল আশ্রিত ওই দুষ্কৃতীরা বাঁকুড়ার জয়পুর থেকে সোনামুখী, ইন্দাস থেকে পাত্রসায়রে সোমবার তাদের দলীয় কর্মীদের মনোনয়নে বাধা দেয় বলে অভিযোগ তুলল বিজেপিও।
অভিযোগ, সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি ও সোনামুখীর মণ্ডল সভাপতি চঞ্চল সরকারকে ওই দুষ্কৃতীরা মারধর করে। জয়পুরে বাধা দেওয়া ও মারধরের অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ করেন বিজেপির বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। ওই অবরোধ থেকে তৃণমূলের রাজ্যনেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের গাড়িতে ইট নিয়ে পাল্টা হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল। যদিও দু’পক্ষই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহ। তবে বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো সব জায়গায় পুলিশি ব্যবস্থা করা হয়েছে।” তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। কোথাও তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে না।’’ এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ বিজেপি প্রার্থীরা সোনামুখী ব্লক অফিসের দিকে যাচ্ছিলেন। বিধায়ক দিবাকরের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের প্রায় দু’শো দুষ্কৃতী বাঁশ নিয়ে আমাদের উপরে হামলা চালায়। প্রতিরোধের চেষ্টা করেও আমাদের কর্মীরা পেরে ওঠেননি। আমার পিঠে লাঠি মারে। মণ্ডল সভাপতি চঞ্চলের মাথা ফাটিয়ে দেয়।’’ বাঁকুড়ার জয়পুরে ব্লক অফিসের কয়েক কিলোমিটার আশপাশে বাঁকুড়া-বিষ্ণুপুর রাজ্য সড়কের উপরেও বিভিন্ন জায়গায় বাঁশ নিয়ে জমায়েত দেখা যায়। তৃণমূলের লোকেরা তাঁদের কর্মীদের মনোনয়নে বাধা দিয়েছেন, এই অভিযোগে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বাঁশে দলীয় পতাকা জড়িয়ে বাঘাজোলে পথ অবরোধ শুরু করেন। ছিলেন কোতুলপুরের বিজেপি বিধায়ক হরকালী প্রতিহারও। গরমে আটকে পড়ে যাত্রীরা নাজেহাল হন। সৌমিত্রর দাবি, ‘‘কাপড়ে মুখ ঢেকে, অস্ত্র হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। পুলিশ অনেক পরে পৌঁছয়।”
ইন্দাসের বিজেপি বিধায়ক নির্মল ধাঁড়াও মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। পাত্রসায়রের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি অনুপ ঘোষ বলেন, “ব্লক অফিস যাওয়ার পথে সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা জমায়েত করে থাকায় আমাদের প্রার্থীরা গ্রাম থেকে বেরোতেই পারেননি।” ছাতনার তৃণমূলের তেঘড়ি পঞ্চায়েত তাঁদের এক প্রার্থীকে জাতিগত শংসাপত্র না দেওয়ার অভিযোগে, পঞ্চায়েত ভবনে ধর্নায় বসেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায়।
কলকাতা যাওয়ার পথে তৃণমূলের রাজ্য নেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি জয়পুরে বিজেপির অবরোধে আটকে পড়ে। সেখানে বিজেপি কর্মীদের ছোড়া ইটের আঘাতে সায়ন্তিকার কনভয়ের পাইলট গাড়ির কাচ ভেঙে যায় বলে অভিযোগ। সায়ন্তিকার অভিযোগ, “বিজেপি সাংসদের নির্দেশে আমার পাইলট গাড়িতে হামলা চলেছে। চালকও জখম হন।” বিজেপি সাংসদ সৌমিত্রের দাবি, “বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে ওই তৃণমূল নেত্রীর গাড়িতে।’’