LOckdown

‘লকডাউন’ শুনেই ফের ভিড় বাজারে

আগের বার টানা ‘লকডাউন’-এ অত্যাবশ্যক পণ্যের মধ্যে মুদিখানা দোকান ও আনাজের বাজার খোলা ছিল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০৫:৪২
Share:

হিড়িক: আনাজ কিনতে বাঁকুড়ার মাচানতলা বাজারে ভিড়। বুধবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র

আজ, বৃহস্পতিবার সারা রাজ্যে এক দিনের ‘লকডাউন’ হতে চলেছে। তার আগের দিন, বুধবার পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার বিভিন্ন এলাকায় বাজার-দোকানে কেনাকাটা করার ভিড় উপচে পড়ল। ভিড়ের বহর দেখে অনেকে আবার তা থেকে সংক্রমণ না ছড়ায় বলে আশঙ্কাও প্রকাশ করলেন। তবে দুই জেলা প্রশাসনই এ দিন বিভিন্ন এলাকায় প্রচার করে জানিয়ে দিয়েছে, কোনও ভাবেই ‘লকডাউন’ অমান্য করা মানা হবে না। রাস্তাঘাটে অপ্রয়োজনে বেরোলেই সরাসরি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে পুলিশ।

Advertisement

আগের বার টানা ‘লকডাউন’-এ অত্যাবশ্যক পণ্যের মধ্যে মুদিখানা দোকান ও আনাজের বাজার খোলা ছিল। বৃহস্পতিবারের ‘লকডাউন’-এ কী-কী খোলা থাকবে বলে যে তালিকা প্রশাসন প্রকাশ করেছে, তাতে অবশ্য মুদির দোকান ও আনাজ বাজারের উল্লেখ নেই।

তা দেখেই এ দিন সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় দোকানে ও বাজারে ভিড় জমে যায়। বাঁকুড়া শহরের পাঠকপাড়ার বাসিন্দা অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগে ‘লকডাউন’-এ দেখেছি, বাজার ও মুদির দোকান খোলা ছিল। এ বার খোলা থাকবে কি না, তা নিয়ে গোড়ায় ধোঁয়াশা থাকলেও ঝুঁকি না নিয়ে এ দিনই বাজার করতে বেরিয়ে পড়েছি। শনিবারও তো আবার ‘লকডাউন’।’’

Advertisement

বাঁকুড়ার চকবাজারে লম্বা ফর্দ নিয়ে মুদিখানা দোকানে ঢুকলেন মিথিলার একটি আবাসনের বধূ মঞ্জু কর্মকার। তিনি বলেন, “দরকারি জিনিসপত্র একবারেই কিনে রাখছি।” বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর থেকে ইন্দাস, পাত্রসায়র-সহ বিভিন্ন বাজারে ভাল ভিড় ছিল। বিষ্ণুপুরের চকবাজারের আনাজ বিক্রেতা বাসু মণ্ডল, জাফর শেখ বলেন, ‘‘ভালই বিক্রিবাটা হল।’’

ঝালদার মুদির দোকানে দেখা গিয়েছে, যাঁরা সাধারণত এক কেজি করে চিনি, আটা কেনেন, তাঁরা অনেকেই দ্বিগুণের বেশি ওই সব সামগ্রী কিনেছেন। ঝালদা শহরের বাসিন্দা মিলন মণ্ডল বলছেন, ‘‘ঝালদাতেও করোনা-সংক্রমণ ছড়িয়েছে। ফলে, শুধু বৃহস্পতিবারই নয়, পরেও যদি টানা ‘লকডাউন’ হয়, সে কথা ভেবেই শুকনো খাবার মজুত করে রাখছি।”

আদ্রাতেও একই ছবি। আদ্রার সাউথ সেটেলমেন্ট এলাকার আনাজ বিক্রেতা বিনয় পাল বলেন, ‘‘দুপুর পর্যন্ত দু’শো কেজি আলু, পঞ্চাশ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। অন্য দিন, এর অর্ধেক বিক্রি হয়।’’

তবে পুরুলিয়া শহরে সম্প্রতি পর পর কয়েক জন করোনা-আক্রান্তের হদিশ মেলার পরে, বুধবার আনাজ বাজার থেকে শুরু করে মুদির দোকান অনেকটা ফাঁকাই ছিল। বাসিন্দাদের একাংশ জানান, সংক্রমণ বাড়ায় অনেকেই ভিড়ে ঠাসা বাজার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন। মানবাজার, বান্দোয়ানে অন্য দিনের মতোই বেচাকেনা হয়েছে।

তবে এর আগেও ‘লকডাউন’-এ শহরাঞ্চলে লোকজনের জটলা দেখা গিয়েছিল। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা শোনা গিয়েছিল বাঁকুড়া শহরে। এ বার কী তেমনই হবে— প্রশ্ন বাসিন্দাদের অনেকের।

বাঁকুড়া জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘প্রতিটি থানার পুলিশ বাসিন্দাদের বুধবার থেকেই লকডাউন-এর ব্যাপারে সতর্ক করছে। বৃহস্পতিবার রাস্তায় পুলিশের টহল থাকবে। জনবহুল এলাকায় পুলিশ পিকেট থাকবে। জেলার সীমানায় কড়া নজরদারি চালানো হবে।’’

পুরুলিয়ার জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘শহরাঞ্চলের সঙ্গে গ্রামাঞ্চলেও নজরদারি চালানো হবে। লকডাউন কোথাও ভাঙা হলেই সরাসরি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মোটরবাইক ও গাড়িতে পুলিশ টহল দেবে।’’

পুরুলিয়া জেলার তিন দিক ঘিরে রয়েছে ঝাড়খণ্ড সীমানা। সেখানে অত্যাবশ্যক পণ্য ও চিকিৎসা পরিষেবার কারণে ছাড়া, অন্যদের ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement