সিউড়ি হাসপাতালে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রোগীকে।
সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও অন্যান্য ওয়ার্ডগুলি নতুন দশতলা ভবনে থাকলেও, অপারেশন থিয়েটার, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, ইউএসজি প্রভৃতি নানা পরীক্ষা করাতে রোগীদের যেতে হয় হাসপাতালের পুরনো ভবনেই। অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর শারীরিক অবস্থা এতই খারাপ থাকে যে, এই ৩০০-৪০০ মিটার রাস্তা যাতায়াত করা তাঁদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। এই অসুবিধার সমাধান করতেই ২০১৯ সালে সিউড়ি সদর হাসপাতালকে দু’টি ব্যাটারি চালিত অ্যাম্বুল্যান্স দিয়েছিলেন সিউড়ির তৎকালীন বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু কয়েক মাস এই পরিষেবা চালু থাকার পরেই অকেজো হয়ে পড়ে অ্যাম্বুলেন্স দু’টি। এখন বিকল অ্যাম্বুল্যান্স দু’টি কোথায় আছে, সে বিষয়ে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য মিলছে না। ফলে, রোগীদের দুর্ভোগ চলছেই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের নতুন দশতলা ভবনে রোগীদের ওয়ার্ড ও জরুরি বিভাগের স্থানান্তরের পরেই এই সমস্যা শুরু হয়। কোনও রোগীর অপারেশন থাকলে বা চোট পেলে নতুন ভবন থেকে পুরনো ভবনে তাঁর পক্ষে হেঁটে যাওয়া সম্ভব হয় না। এই পরিস্থিতিতে অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর আত্মীয়েরা অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করতেন। অনেক সময় আবার স্ট্রেচারে রোগীদের এক ভবন থেকে অন্য ভবনে নিয়ে যাওয়া হত। কিন্তু মাঝের রাস্তাটি ভাল না হওয়ায়, রোগীদের সমস্যা হত। এই সমস্যা দূর করার জন্য হাসপাতালের পক্ষ থেকে তৎকালীন বিধায়কের কাছে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের আবেদন জানান হয়। সেই মতো সিউড়ির তৎকালীন বিধায়ক প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকার দু’টি ব্যাটারি চালিত ই-অ্যাম্বুল্যান্স দেন হাসপাতালকে। কিন্তু পরিষেবা চালু হতে না হতেই স্তব্ধ হয়ে যায়।
হাসপাতালের কর্মীরা জানান, এখনও সিটি স্ক্যান, এক্স-রে, অস্ত্রোপচারের জন্য রোগীদের নতুন ভবন থেকে পুরনো ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই ভাড়ার অ্যাম্বুল্যান্স, স্ট্রেচারেই কাজ চলছে। সম্প্রতি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে এসে জেলাশাসক বিধান রায় বলেছিলেন, ‘‘জেলা পরিষদের অর্থ সাহায্যে নতুন করে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হবে।’’
তবে হাসপাতালের সুপার নীলাঞ্জন মণ্ডল বলেন, “এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে এখনও কোনও কথা হয়নি। ওই দুটি ই-অ্যাম্বুল্যান্স নার্সিং হোস্টেলের ভিতরে বিকল হয়ে পড়ে আছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজছি। ইতিমধ্যেই নতুন ভবনে অস্ত্রোপচারের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন ভবনে এক্স-রে যন্ত্রও আনা হয়েছে, তবে তার মেরামতির প্রয়োজন। দ্রুত নতুন ভবনে সিটি স্ক্যান চালু করারও অভাবনাচিন্তা চলছে। আমরা চাইছি নতুন ভবনে যে রোগীরা আসবেন, তাঁদের কোনও কারণেই যাতে বাইরে যেতে না হয় তা নিশ্চিত করা। তা হলেই সমস্যারও সমাধান হবে এবং কাজ অনেক দ্রুত হবে।”