Durbazpur

হাসপাতালে গিয়ে রোগীকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রশাসনের

কী ভাবে সঙ্কটজনক স্বামীকে সুস্থ করে তুলবেন, সেই দুঃশ্চিন্তার পাশাপাশি বিপুল চিকিৎসার খরচ নিয়ে চিন্তায় ছিলেন সুখময়বাবুর স্ত্রী রুমা মুখোপাধ্যায়। খবর পেয়ে এগিয়ে আসে প্রশাসন।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:০৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

দুর্ঘটনায় জখম হয়ে ভিন্ জেলার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে প্রৌঢ়ের। সেই চিকিৎসায় সুবিধার জন্য উজিয়ে সেখানে গিয়ে বৃহস্পতিবার পরিবারের স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পৌঁছে দিল দুবরাজপুর ব্লক প্রশাসনের স্বাস্থ্যসাথী সেল। বিপদের সময় প্রশাসন এ ভাবে পাশে দাঁড়ানোয় আপ্লুত আহতের পরিবার। দুবরাজপুরের বিডিও অনিরুদ্ধ রায় বলছেন, ‘‘সরকার যে উদ্দেশে এই প্রকল্প তৈরি করেছে সেটা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র।’’

Advertisement

ব্লক প্রশাসন ও আহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় আহত ওই প্রৌঢ়ের নাম সুখময় চক্রবর্তী। বাড়ি দুবরাজপুরের বালিজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কুলেকুড়ি গ্রামে। শহরের মোটরবাইকের শোরুমে কাজ করেন। ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আর এক জনের বাইকে বাড়ি ফেরার সময় গোকরুল-কুখুটিয়া রাস্তায় ছিটকে পড়ে মারাত্মক জখম হন। পরিবারের সদস্যাদের অভিযোগ, খয়রাশোল যাওয়ার ওই রাস্তায় পূর্ত দফতর কালভার্ট তৈরির জন্য গর্ত খুঁড়েছিল। সতর্কীকরণ বোর্ড না থাকায় গর্ত দেখতে পাননি বাইক আরোহী। তিনি সে ভাবে চোট না পেলেও সুখময়বাবু মারাত্মক চোট পান। প্রায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় প্রথমে দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতাল, সিউড়ি জেলা হাসপাতাল ও পরে পরস্থিতির অবনতি হওয়ায় দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে।

কী ভাবে সঙ্কটজনক স্বামীকে সুস্থ করে তুলবেন, সেই দুঃশ্চিন্তার পাশাপাশি বিপুল চিকিৎসার খরচ নিয়ে চিন্তায় ছিলেন সুখময়বাবুর স্ত্রী রুমা মুখোপাধ্যায়। খবর পেয়ে এগিয়ে আসে প্রশাসন। স্বাস্থ্যসাথী ডিজিটাল কার্ড তৈরির বিশেষ ধরনের প্রিন্টার, ল্যাপটপ সহ কিট নিয়ে ভিন্ জেলার হাসপাতালে হাজির হয়ে রুমাদেবীর হাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তুলে দেয় প্রশাসন। রুমাদেবী বলছেন, ‘‘চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ওর সঙ্কটজনক অবস্থা এখনও কাটেনি। এই পরিস্থিতে যে ভাবে ব্লক প্রশাসন পাশে দাঁড়াল সেটা অনেক বড় বিষয়। না হলে খরচ চালানো কষ্টকর হত।’’ একই বক্তব্য ছেলে সম্রাট চক্রবর্তীরও।

Advertisement

পেশায় শিশুশিক্ষাকেন্দ্রের কর্মী এর আগেও স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডের আবেদন করেছিলেন। কোনও কারণে পাননি। ফের দুয়ারে সরকারের শিবিরে গিয়ে আবেদন করেছিলেন কিছু দিন আগে। আবেদন জমা পড়ার পরে ইউআরএন কোড (ইউনিক রেজিস্ট্রেশন কোড) পেয়েছিলেন। ছবি করার তারিখও পেয়েছিলেন। তার আগেই ওঁর স্বামীর দুর্ঘটনা হয়। কিন্তু পরিবারকে সমস্যায় পড়তে দেয়নি প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, আবেদন করার পরে ইউআরএন কোড জেনারেট হলেই তিনি স্বাস্থ্যসাথী সুবিধা পাওয়া অধিকারী। তেমন কেউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলে এর আগেও এ ভাবেই অনেককে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অন্তর্ভূক্তির জন্য। এ পর্যন্ত মোট ২৭৩৭২৬টি আবেদন জমা পড়েছে। ইতিমধ্যেই কার্ড হাতে পেয়েছেন ১০৭৫৯৩ জন। ইউআরএন কোড পেয়ে গিয়েছেন ২৫০৮২০ জন। তাঁদের বা তাঁদের পরিবারের কোনও সদস্যঅসুস্থ হলে কার্ড পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে প্রশাসন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement