কেন্দ্রীয় বাহিনী সরানোর দাবিতে সাঁইথিয়া হাইস্কুলের গেটে বিক্ষোভ পড়ুয়ারা। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র।
স্কুল থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকেরা। সোমবার সাঁইথিয়া হাইস্কুলের ঘটনা।
অভিভাবকদের ক্ষোভ, ক্লাসঘর কেন্দ্রীয় বাহিনীর দখলে। কবে কেন্দ্রীয় বাহিনী স্কুল থেকে সরবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই স্কুলে এসেও ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের শুধু শুধু ফিরে যেতে হচ্ছে। অবিলম্বে পঠনপাঠন চালুর দাবিতে স্কুল গেটে এ দিন বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে বলে জানান অভিভাবকেরা।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের কাজে কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার জন্য প্রথম দফায় ১০ জুলাই থেকে ৫ দিন স্কুলবাড়ি নেওয়া হয়। পরবর্তীকালে সেই সময়সীমা বাড়িয়ে করা হয় ২১ জুলাই। কিন্তু তারপরেও স্কুল থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরানো হয়নি। কবে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরবে, তা নিয়েও অভিভাবকেরা অন্ধকারে বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে চরম সমস্যায় পড়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, ২১ জুলাই থেকেই ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুলে আসছেন। কিন্তু, ক্লাসঘর কেন্দ্রীয় বাহিনীর দখলে থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। এ দিনও স্কুলে এসে শিক্ষক শিক্ষিকা-সহ প্রায় আড়াইশো ছাত্রছাত্রীকে ফিরে যেতে হয়েছে।
নবম শ্রেণির ছাত্র সোহম মণ্ডল, দশম শ্রেণি অর্ণব দত্তরা জানিয়েছে, অগস্টের প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় সার্বিক মূল্যায়ন পরীক্ষা রয়েছে। রয়েছে সিলেবাস শেষ করার চাপও। কিন্তু স্কুলে এসে ঘুরে যেতে হচ্ছে। শুধু শুধু সময় নষ্ট হচ্ছে। এ দিন অবিলম্বে পঠনপাঠন চালুর দাবিতে স্কুল গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দা তথা অভিভাবকদের একাংশ।
ভীষ্মদেব দাস, অসীম দত্তরা বলেন, ‘‘সব কিছুতেই স্কুলগুলোতেই কোপ পড়ে। আর তার মাসুল গুনতে হয় ছাত্রছাত্রীদের।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক জগবন্ধু রায় বলেন, ‘‘কবে নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনী স্কুল থেকে সরবে তার কোনও সদুত্তর পাইনি। তাই ছাত্রছাত্রীদেরও কিছু বলতে পারিনি। আমাদের মতো ওদেরও স্কুলে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে। আমাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে।’’ বিডিও তথা ব্লক রিটার্নিং অফিসার সৈকত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই স্কুলের পক্ষ থেকে সমস্যার কথা জানিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’’
ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রংও। বিজেপির তরফে যেহেতু তাদের আইনজীবী নেত্রী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল আদালতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকার মেয়াদ আরও বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন, তাই পড়াশোনার ক্ষতির জন্য বিজেপিকে দুষেছেন তৃণমূল নেতাদের একাংশ। বিজেপির সাংগঠনিক জেলা (বীরভূম) সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। সে জন্য আমাদের কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানাতে হয়েছিল।’’ তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির মুখপাত্র বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। তাই কিছু মন্তব্য করতে চাইনা। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অন্য রাজ্যের তুলনায় আমাদের অনেক ভাল।’’