জেলায় ছ’টি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন হতে চলেছে বৃহস্পতিবার। শনিবারই বাঁকুড়া জেলার পঞ্চায়েত সমিতিগুলির বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। আপাতত মহকুমাশাসকেরা পঞ্চায়েত সমিতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলার জন্য কেবলমাত্র যে সব পঞ্চায়েত সমিতিগুলিতে সব ক’টি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে সেখানেই বোর্ড গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই মোতাবেক বৃহস্পতিবার জেলার হিড়বাঁধ, ইন্দপুর, খাতড়া, রাইপুর, সারেঙ্গা ও সিমলাপাল পঞ্চায়েত সমিতিতেই বোর্ড গড়া হবে। এই সব ক’টি পঞ্চায়েত সমিতিই ভোটে জয়লাভ করেছে তৃণমূল। বিরোধীদের সঙ্গে শাসকদলের আসনের ব্যবধানও অনেক। তাই তৃণমূলের বোর্ড গঠনের পথে কোনও বাধা আসার কথা নয়। যদিও দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে সামাল দিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ-সভাপতি ঠিক করাই শাসকদলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্রের কটাক্ষ, “ব্লকে ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কে হবে তা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে।” যদিও বিজেপির এই দাবি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে তৃণমূল। দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা প্রশ্ন, “কিছু দিন আগেই তো বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন হল। কোথাও কোনও সমস্যা হয়েছে কি?’’
জয়দীপবাবুর কথা প্রেক্ষিতে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন ইঁদপুর ব্লকের ভেদুয়াশোল গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের ঘটনাকে নিয়ে। ঘটনা হল, মুখবন্ধ খামে দলের তরফে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান হিসেবে যাঁর নাম পাঠানো হয়েছিল, ভোটে তিনি হেরে যান। তাই অন্য এক ব্যক্তিকে প্রধান করা হয় ওই পঞ্চায়েতে। তৃণমূলের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ওই পঞ্চায়েতে দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়াতেই ওই ঘটনা ঘটেছিল। জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খান দাবি করেন, “পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচন নিয়ে দলে কোথাও কোনও দ্বন্দ্ব নেই। মুখবন্ধ খামে বোর্ড গঠনের দিন সভাপতি ও সহ-সভাপতির নাম পাঠাবে।” বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের প্রস্তুতি সারা। সব জায়গায় পুলিশি নিরাপত্তা থাকবে।” ঘটনা হল, জেলার বাকি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিগুলির বোর্ড গঠন কবে হবে, তা অবশ্য এখনও নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেনি প্রশাসন। জেলাশাসক বলেন, “বোর্ড গঠনের দিন চূড়ান্ত হলেই তা জানিয়ে দেওয়া হবে।”