হট্টগোল: শনিবার পুর়সভায় ডেপুটেশন। নিজস্ব চিত্র
বিরোধীদের সঙ্গে শাসকদলের কাউন্সিলরদের একাংশ এক জোটে তৃণমূলের পুরপ্রধানের কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলেন। মিছিল থেকে তৃণমূল পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে স্লোগান উঠল— সকলের জন্য বাড়ি প্রকল্পে বকেয়া কিস্তির টাকা ছাড়ো, না হলে গদি ছাড়ো। শনিবার এই দাবিতে উত্তাল হল ঝালদার পুরভবন লাগোয়া এলাকা। পুরসভার সিংহভাগ কাউন্সিলরেরাই শুধু নন, তাঁদের সঙ্গে পুর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের মানুষজনও যোগ দিয়েছিলেন, ওই প্রকল্পের বকেয়া কিস্তির টাকা নিয়ে ক্ষোভের পারদ চড়ছে এই পুরশহরে। তা হাতিয়ার করতে বিরোধী কাউন্সিলেরা নাগরিক মঞ্চ গড়ে তুলেছেন। সেই মঞ্চে সামিল হয়েছেন তৃণমূলের উপপুরপ্রধান থেকে ঝালদা শহর তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতিও।
যদিও পুরসভার কাজে কলকাতায় ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে এ দিন যে তিনি স্মারকলিপি নিতে ঝালদায় থাকতে পারবেন না, তা আগেই জানিয়েছিলেন পুরপ্রধান সুরেশ অগ্রবাল। এ দিন তিনি ছিলেনও না। তিনি মঙ্গলবার স্মারকলিপি দিতে বলেছিলেন। তবুও পূর্ব ঘোষণা মতো এ দিনই স্মারকলিপি দিতে যাবেন বলে মঞ্চের নেতারাও জানিয়ে দিয়েছিলেন।
এই টানাপড়েনের মধ্যেই শনিবার দুপুরে মঞ্চ মিছিল শুরু করে পুরভবনের দিকে এগিয়ে যায়। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন কংগ্রেসের মহেন্দ্রকুমার রুংটা, পিন্টু চন্দ্র, তৃণমূলের প্রদীপ কর্মকার, কাঞ্চন পাঠক, ফব-র তপন কান্দু-সহ বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর। ঝাঁটা হাতে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের পুরুষ ও মহিলারাও সামিল হয়েছিলেন।
মহিলারা দাবি তোলেন, তাঁরা মাথার উপর ছাদ হারিয়ে অসহায় অবস্থার মধ্যে বসবাস করছেন। তাই অবিলম্বে বাড়ি নির্মাণের টাকা ছাড়তে হবে। মিছিল পুরভবনে আসতেই দরজা আটকে থাকা পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সামান্য ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। তবে ঘটনা এর বেশি গড়ায়নি।
ফব কাউন্সিলর তপন কান্দুর অভিযোগ, ‘‘পুরপ্রধান মানুষের সমস্যাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের ইচ্ছা মতো কাজ করছেন। তাই সবাই পথে নেমেছেন।’’ কংগ্রেসের পিন্টু চন্দ্রের প্রশ্ন, ‘‘বাড়ির কাজ কিছু দূর এগিয়ে যাওয়ার পরে এখন হঠাৎ করে বলা হচ্ছে কিছু বাড়ির নির্মাণে গোলমাল রয়েছে। পুরসভার এতদিন কেন নজর দেয়নি?’’ এক ধাপ এগিয়ে পুরপ্রধানের নিজের দলেরই কাউন্সিলর প্রদীপ কর্মকার অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘বেছে বেছে পুরপ্রধান নিজের অপছন্দের কাউন্সিলদের ওয়ার্ডের বাড়িগুলিকে নিরাপদ নয় বলে তালিকা তৈরি করেছেন। আমরা মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেটের (এমইডি) পর্যবেক্ষণ নিয়েও সন্দিহান। তাই পুরপ্রধানের সঙ্গে এ ব্যাপারে খোলাখুলি আলোচনা করতে এসেছিলাম। কিন্তু তিনি অনুপস্থিত থেকে এড়িয়ে গেলেন।’’ স্মারকলিপি গ্রহণ করে পুরসভার এগ্জিকিউটিভ অফিসার জয়দেব ঘোড়া বলেন, ‘‘তাঁদের দাবিদাওয়া পুরপ্রধানকে জানিয়ে দেব।’’ পুরপ্রধান বলেন, ‘‘নিরাপদ নয় বাড়ির তালিকা আমি তৈরি করিনি, এমইডি পরিদর্শন করে সব করেছে। লোকজনকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা চলছে।’’