ঘরে ভাঙন, তবু বিরোধী দখলেই থাকল পঞ্চায়েত

বিরোধী সদস্যেরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেও পঞ্চায়েতের দখল নিতে পারল না শাসকদল। ঝালদা ১ ব্লকের পুস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। সিপিএম-কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলের নেতাদের দাবি, জেলার অন্য গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে যে ছকে তৃণমূল বিরোধীদের ভাঙিয়ে ক্ষমতার দখল নিচ্ছে এখানে সেটা ভেস্তে দিতে পেরেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১৬
Share:

বিরোধী সদস্যেরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেও পঞ্চায়েতের দখল নিতে পারল না শাসকদল। ঝালদা ১ ব্লকের পুস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। সিপিএম-কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলের নেতাদের দাবি, জেলার অন্য গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে যে ছকে তৃণমূল বিরোধীদের ভাঙিয়ে ক্ষমতার দখল নিচ্ছে এখানে সেটা ভেস্তে দিতে পেরেছেন।

Advertisement

মঙ্গলবার টানটান উত্তেজনার মধ্যে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের তলবি সভায় যত সংখ্যক সদস্যের সমর্থন পেলে পঞ্চায়েতের দখল পেত তৃণমূল সেই সংখ্যক সদস্য ভোটাভুটির সময় তাঁরা হাজিরই করতে পারেনি। উল্টো দিকে গত ২৩ অগস্ট ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে যে পঞ্চায়েত সদস্যকে তৃণমূল নিজেদের দলে ভিড়িয়েছিল, টানা দুই সপ্তাহ ধরে নানা নাটকের পর সেই পঞ্চায়েত সদস্য বুধবার ফের ফরওয়ার্ড ব্লকেই ফিরে এসেছেন বলে ফব সূত্রে জানানো হয়েছে।

কেমন নাটক?

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত গত ১ অগস্ট। এই গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল-কংগ্রেস জোট। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১১টি আসনের মধ্যে তৃণমূল তিনটি, কংগ্রেস তিনটি, ফব চারটি ও সিপিএম একটি আসন পায়। যৌথ ভাবে পঞ্চায়েত গড়ে তৃণমূল-কংগ্রেস জোট। প্রধান হয় কংগ্রেসের, উপপ্রধান তৃণমূলের। এত দিন ঠিকঠাক চললেও গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে-পরে রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে যাওয়ায় তৃণমূল-কংগ্রেস সম্পর্কে ফাটল ধরে। গত ১ অগস্ট কংগ্রেস-বাম যৌথভাবে তৃণমূলের উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে। অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই অনাস্থার তলবি সভার আগের দিনে তৃণমূলের উপপ্রধান শ্যামলী মানকি পদত্যাগ করেন। ঘটনার ১১ দিন পরে গত ২৩ অগস্ট এই গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই ফব সদস্য চম্পাবালা মাহাতো ও জুড়েন মাহাতো এবং কংগ্রেসের রুমা মুড়া তৃণমূলে যোগ দেন। দলবদলের কয়েক দিন পরে চম্পাবালা মাহাতোর ছেলে সিদ্ধেশ্বর পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন যে তাঁর মাকে অপহরণ করা হয়েছে। পরে আদালত জেলার পুলিশ সুপারকে এই সদস্যাকে খুঁজে বাড়িতে ফিরিয়ে দেবার নির্দেশ দেন।

এই টানাপড়েনের মধ্যেই মঙ্গলবার ছিল এই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নির্বাচন। কারণ উপপ্রধান তলবি সভার আগেই পদত্যাগ করেছিলেন। উপপ্রধানের পদে তৃণমূলের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন রুমা মুড়া। বাম-কংগ্রেসের পক্ষে লক্ষীমণি মাছুয়ার। দু’জনেই পাঁচটি করে ভোট পাওয়ায় টসে জিতে রুমা উপপ্রধান হন। অন্য দিকে আদালতে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার পরে পুলিশি নিরাপত্তায় চম্পাবালাদেবীকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। তিনি আর পঞ্চায়েতমুখো হননি। স্থানীয় সূত্রের খবর, উপপ্রধান গঠনে দু’পক্ষ সমান ভোট পড়ায় তৃণমূল আর উৎসাহ দেখায়নি। এই নাটকের পর বুধবার বিকেলে চম্পাবালাদেবী ফের ফব-তেই ফিরেছেন। দলের জেলা সম্পাদক নরহরি মাহাতোর দাবি, ‘‘ওনাকে ভুল বুঝিয়ে শাসক দলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’’ অস্বীকার করে তৃণমূলের ঝালদা ১ ব্লকের সভাপতি দীনদয়াল মাহাতো দাবি করেছেন, ‘‘জোর করার প্রশ্নই নেই। উনি নিজেই এসেছিলেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement